সদ্য প্রত্যাহার হওয়া কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন ও নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের মধ্যে টেলিফোনে কথোপকথনের অডিও প্রকাশ হয়েছে।
রোববার জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার আরিফকে ফোন করেন ডিসি সুলতানা পারভীন। ফোনালাপে আরিফকে মামলা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়ে চুপ থাকতে বলেছিলেন তিনি।
ওই অডিওতে ডিসি সুলতানা পারভীনকে বলতে শোনা যাচ্ছে- ‘একটু নিরিবিলি থাকো, এখন মিডিয়াকে অ্যাভয়েড (এড়ানো) করে থাকো।… দেখা যাক আল্লাহ ভরসা। তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে আপাতত চিন্তা করার দরকার নাই। ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা করার কিছু নাই। আমরা তোমার পাশে থাকব। তোমার মামলা প্রত্যাহার করে নেব। একটু সময় দিও। একটু পজিটিভলি দেখতে হবে।’
কথোপকথনে এনকাউন্টারে দেয়ার হুমকি পাওয়ার মতো অপরাধ করেছেন কিনা আরিফ তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন,‘এনকাউন্টারের মানসিকতা আসলে আমাদের ছিল না। ওইভাবে ছিল না।’
এ ব্যাপারে আরিফুল ইসলাম বলেন, কারাগার থেকে বের হওয়ার পর জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি আমাকে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে চুপ থাকতে বলেন। আমি আসলে তখন আতঙ্কিত ছিলাম। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত ছিলাম।
তবে আরিফের সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়ে সুলতানা পারভীনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে কুড়িগ্রাম ছাড়ার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সেদিনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, সেটি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ বিষয়ে নিয়ে ব্যাখ্যা দেন সুলতানা পারভীন।
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে কুড়িগ্রামে দুই বছর থাকাকালীন উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে সেদিন রাতের ঘটনায় নিজের দায় এড়িয়ে অধস্তন কর্মকর্তাদের ওপর সব দোষ চাপান।
মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ও নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম এখনও কুড়িগ্রামে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার ডান হাতে ফাটল ধরা পড়েছে। এছাড়া সারা শরীরে ব্যথা রয়েছে। মানসিকভাবে আতংকে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
এদিকে ঘটনায় প্রত্যাহারকৃত জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের স্থলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগকৃত নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এখনও যোগদান করেননি। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি যোগদান করতে পারেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।