সারা বিশ্বে মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন—এই করোনা ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি মিলবে কবে? এই যে লকডাউন চলছে তা শেষ হলেই কি আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব আমরা? হতাশার কথা হচ্ছে, এর উত্তর কারো কাছেই নেই।
লকডাউন করে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা আসলে বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবে ভাইরাসের সংক্রমণকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা। কবে, কখন, কীভাবে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি মিলবে তার সদুত্তর দিতে পারছে না কেউ বরং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিচালক ট্রেডস আধানম বলছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ খুব শিগিগরই থামবে না। তা এখনো অনেক দিন ভোগাবে বলে সারা বিশ্বের মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
টেড্রস এও বলছেন, পৃথিবীর বহু দেশ এখনো সংক্রমণ মোকাবিলার প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। তাই এ ভাইরাসকে প্রতিহত করার কাজে কোনো ভুল করবেন না। এই ভাইরাস এখনো অনেক দিন আমাদের সঙ্গে থাকবে। যদিও, বিশ্বে বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। মানবদেহে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এরই মধ্যে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে। এরপর গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যেও মানবদেহে টিকার প্রয়োগ করা হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছে মানুষ। কিন্তু জেনে রাখা ভালো, সেই পরীক্ষা বেশ সময় সাপেক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ খুব শিগিগরই থামবে না। কিছু দেশ ভাবতে শুরু করেছিল যে তারা সংক্রমণের বিপদ বুঝি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। কিন্তু সেখানে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। আবার আফ্রিকা ও আমেরিকায় সংক্রমণ যে হারে ছড়াচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক।
শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, গোটা দুনিয়ার প্রথিতযশা সব বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতই হলো, এখন সংক্রমণকে কেবল ঠেকিয়ে রাখা হচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভ্যাকসিনের মানুষের শরীরে পরীক্ষা করে দেখা শুরু করেছে। তা কতটা কাজ করছে পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু সেই ভ্যাকসিন আদৌ কার্যকর হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আবার ভ্যাকসিন কার্যকরী প্রমাণিত হলেও সারা বিশ্বের মানুষকে টিকা দিতে কয়েকশ কোটি ভ্যাকসিন লাগবে। তা উৎপাদন কতদিনে হবে তাও অনিশ্চিত। চীনের পরে এখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমছে বলেই মনে করা হচ্ছিল। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমছে। মৃতের সংখ্যাও কমে আসছে। তবে, এই কমে আসা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। যেসব দেশ শুরুর দিকে আক্রান্ত হয়েছে সেসব দেশে প্রকোপ কমে আসার পরে নতুন করে আবারও প্রকোপ শুরু হতে দেখা গেছে।