তৃণমূল আওয়ামী লীগে ‘ক্ষমতার ভারসাম্য’ আনতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। এ জন্য দলের উপজেলা সম্মেলনে বর্তমান এমপিদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে ‘না’ করেছেন খোদ দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছর নভেম্বর মাসে তিনি দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন। তবে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে যুক্ত হন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন নবনির্বাচিত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। এ সম্মেলনে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ও এনা প্রপার্টিজের মালিক এনামুল হককে সভাপতি এবং গোলাম সরোয়ার আবুল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার আবুল প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে দলকে পুনর্গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগকে ‘আওয়ামী লীগারদের’ হাতে ফিরিয়ে দিতে চান বঙ্গবন্ধুকন্যা। সে কারণে দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। চলমান উপজেলা সম্মেলনে বর্তমান দলীয় এমপিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করতে নিষেধ করেছেন। এর ব্যত্যয় যারা ঘটাবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
সূত্রমতে, অনেক এমপি রয়েছেন যারা আগে দলের দায়িত্বশীল পদে না থাকলেও এমপি হওয়ার কারণে সংগঠনের উপজেলায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নিচ্ছেন। ফলে অনেক ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন। একসঙ্গে দুই পদে থাকার কারণে এলাকায় একক ‘নিয়ন্ত্রক’ হয়ে ওঠেন এমপিরা। সে বলয় ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছর ১৫ নভেম্বর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে দলীয় সংসদ সদস্যরা থাকতে পারবেন না। এমপিদের উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা এমপি হতে পারেননি, তারা যেন নেতা হওয়ার সুযোগ পায়। তবে জেলাপর্যায়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন এমপিরা। কারণ কেন্দ্রের সঙ্গে তাদের সমন্বয় করতে হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।