ইউক্রেনে-রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের এক বছর আজ। এই যুদ্ধের প্রভাবে এরই মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতির টালমাটাল অবস্থা হলেও, সংঘাত থামার কোন ইঙ্গিত নেই। বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। এছাড়া, রুশ-মার্কিন পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নতুন সহিংসতার শঙ্কা বাড়িয়েছে।
ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে ইউক্রেন তোরজোর শুরুর পর থেকেই কিয়েভ ও যুক্তরাষ্ট্র বারবার শঙ্কা জানাচ্ছিল, ইউক্রেনে হামলা করবে রাশিয়া। যদিও সেই আশঙ্কা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিল মস্কো।
তবে, সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। যদিও একে আক্রমণ নয়, বিশেষ সামরিক অভিযান বলে বর্ণনা করে মস্কো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের সূত্রপাত ঘটায় ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত। দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় কয়েক লাখ ইউক্রেনীয়।
পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, কয়েকদিন বা সপ্তাহের মধ্যে কিয়েভের পতন হবে। মস্কোর ধারণাও একই ছিল। তবে, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো, অস্ত্র সহায়তা নিয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ালে প্রতিরোধ গড়ে তোলে কিয়েভ।
অভিযান শুরুর প্রথম কয়েক মাসে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করে রাশিয়া। যদিও বছরের দ্বিতীয় ভাগে বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় ইউক্রেন।
সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল নিজেদের সাথে অধিভুক্ত করে নেয় রাশিয়া। অক্টোবরে ধারাবাহিক হামলায় ধ্বংস করে দেয় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা।
এদিকে যুদ্ধের বর্ষপূর্তির ৩ দিন আগে আকস্মিক কিয়েভ সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন আক্রমণ ছিল রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভুল সিদ্ধান্ত।
এর পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন পুতিন। একইসাথে পশ্চিমারা সরে না গেলে প্রয়োজনে ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
রাশিয়াকে রুখতে, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। আবার সরাসরি রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয় ইরান ও বেলারুশ। আর, নিরপেক্ষ থেকে রাশিয়াকে সুবিধা করে দেয় চীন, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্য।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ৮ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মতামত দিন