ফরম্যাট বদলালেও ফর্ম বদলায়নি বাংলাদেশের। একমাত্র টেস্টে ইনিংস হারের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া জিম্বাবুয়ে টি ২০তেও দাঁড়াতে পারল না স্বাগতিকদের সামনে।
সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি ২০তে জিম্বাবুয়েকে ৪৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ এড়াতে সতর্কতার অংশ হিসেবে এই ম্যাচে টিকিট বিক্রিতে রাশ টেনেছিল বিসিবি। জনসমাগম কমাতে মাত্র পাঁচ হাজার টিকিট ছাড়া হয়েছিল। করোনা আতঙ্কের মধ্যে যারা মাঠে এসেছিলেন, তাদের টিকিটের পয়সা উশুল।
লিটন দাস (৩৯ বলে ৫৯) ও সৌম্য সরকারের (৩২ বলে ৬২*) ঝড়ো ফিফটিতে তিন উইকেটে ২০০ রানের পাহাড় গড়ে অর্ধেক পথেই ম্যাচের ফল নিয়ে সব সংশয় মুছে দিয়েছিল বাংলাদেশ। নয় রানের জন্য ফিফটি না পেলেও লিটনকে নিয়ে দলকে আরেকটি রেকর্ড জুটি উপহার দিয়েছেন তামিম ইকবাল।
তাদের ৯২ রানের যুগলবন্দি টি ২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোস্তাফিজুর রহমানের আগুনে পেস ও আমিনুল ইসলামের বিষাক্ত স্পিনে শুরুতেই পথ হারানো জিম্বাবুয়ে ১৯ ওভারে ১৫২ রানে গুটিয়ে যায়।
সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে ওপেনার টিনাশে কামুনহুকামওয়ের ব্যাট থেকে। মোস্তাফিজ ও আমিনুল নেন তিনটি করে উইকেট। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় সদ্য ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব পাওয়া তামিম ইকবালের। এক্সট্রা কভারে ক্যাচ নেন শন উইলিয়ামস। বোলার মাধেভেরে। নো বল না হওয়ায় সাজঘরের পথ ধরতে হয় ৩৩ বলে তিন চার ও দুই ছয়ে ৪১ রান করা তামিমকে।
এগারোতম ওভারের দ্বিতীয় বলে তামিমের বিদায়ে ভাঙে ৯২ রানের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটি। সেই ওভারেই অর্ধশত রান পূর্ণ করেন দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাস। মাধেভেরের বল ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ারে পাঠিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন। অবশ্য হাফসেঞ্চুরি করার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি।
১৩ ওভারের শেষ বলে লিটন শিকার হন সিকান্দার রাজার। লেগ বিফোরের আপিলে আম্পায়ার সাড়া দেয়ার পর লিটন সাজঘরের পথ ধরেছিলেন। কিন্তু কী মনে করে এক সেকেন্ড বাকি থাকতে ফিরে এসে রিভিউ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রিভিউ টেকেনি।
অগত্যা ৩৯ বলে ৫৯ রানে থামতে হয় তামিমের উদ্বোধনী জুটিকে। ১৫১.২৮ স্ট্রাইক রেটে লিটন পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান। লিটনের বিদায়ের পর ঝড় তোলেন নির্বাচকদের হাস্যকর ভুলে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া সৌম্য সরকার। বিয়ের পর নিজের প্রথম ইনিংসেই তুলে নিলেন ফিফটি।
খেললেন আন্তর্জাতিক টি ২০তে নিজের সেরা ইনিংসটি। চারটি চার ও পাঁচ ছক্কায় মাত্র ৩২ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন সৌম্য। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমের (১৭) সঙ্গে তার ৪০ রানের জুটি ভাঙার পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে আরও ৫৪ রান যোগ করেন সৌম্য।
২৫ বলের এই বিস্ফোরক জুটিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর অবদান নয় বলে ১৪*। তাতেই তিন উইকেটে ২০০ রানের পাহাড়ে উঠে যায় বাংলাদেশ। টি ২০তে যা বাংলাদেশের তৃতীয় দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।