নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর ইস্কাটনে গুলি চালিয়ে দু’জনকে হত্যার দায়ে বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া সাবেক সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে জামিন দেয়নি হাই কোর্ট।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার তার আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছে ।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত আবেদনটি আউট অব লিস্ট করে বলেছেন, জোড়া খুন ৫ বছর ধরে কাস্টডিতে আছে। পরে আসেন।”
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল ঈমাম আসামি রনির উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দেয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর তিনি হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে।
এ আপিল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বুধবার সে আবেদনটিই শুনানির জন্য উঠলে তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
অপরাধ প্রমাণ হলেও ‘অবস্থা বিবেচনায়’ রনির যাবজ্জীবন
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে নিউ ইস্কাটনে গাড়ি থেকে ছোঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে আবদুল হাকিম নামের এক রিকশাচালক এবং ইয়াকুব আলী নামের এক অটোরিকশাচালক আহত হন।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ওই বছর ৩১ মে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পিনু খানের বাসা থেকে তার ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে আটক করে। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
তদন্ত শেষে ২১ জুলাই রনিকে একমাত্র আসামি করে ৩০২ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই দীপক কুমার দাস।
‘খুনের উদ্দেশ্য না থাকলেও’ আসামি জানতেন যে তার গুলিতে কেউ হতাহত হতে পারে- এই যুক্তিতে হত্যার অভিযোগ এনে এ মামলায় ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেন তিনি।
নিহতের শরীরে পাওয়া গুলির ব্যালাস্টিক রিপোর্ট,রনির অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের প্রতিবেদনসহ মোট ১৫টি আলামত অভিযোগপত্রের সঙ্গে যুক্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩৭ জনকে সাক্ষী করা হয়।
২০১৭ সালের বছর ৬ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে জোড়া খুনের এ মামলায় আসামি রনির বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার দ্বিতীয় মহানগর দায়রা জজ সামছুন নাহার।
২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় দেয় বিচারিক আদালত।