• ২০২৫ Jun ০৯, সোমবার, ১৪৩২ জ্যৈষ্ঠ ২৬
  • সর্বশেষ আপডেট : ১১:০৬ অপরাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

যেসব উপসর্গে বুঝবেন হাড়ের ক্যানসারে আক্রান্ত 

  • প্রকাশিত ০৭:০৬ অপরাহ্ন সোমবার, Jun ০৯, ২০২৫
যেসব উপসর্গে বুঝবেন হাড়ের ক্যানসারে আক্রান্ত 
ফাইল
ফিচার ডেস্ক :

বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ মারা যায় নীরব ঘাতক ক্যানসারে। ক্যানসার একটি বড় রোগ। এর চিকিৎসাও ব্যবয়বহুল, যা সময়মত না করালে মৃত্যু ঘনিয়ে আসতে পারে। ক্যানসার প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। দুধরনের সচেতনতাই অবলম্বন করা জরুরি।

প্রথমত প্রতিরোধের জন্য হতে হবে স্বাস্থ্য সচেতন, দ্বিতীয়ত লক্ষণগুলো জানতে হবে, যাতে করে প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা পড়ে রোগটি।  চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়। ক্যানসারের লক্ষণগুলোর ওপর নির্ভর করে এটি কোথায়, কতটা বড় এবং এর কাছাকাছি কোনো অঙ্গ বা টিস্যুকে কতটা প্রভাবিত করে।  

ক্যানসার যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এজন্য এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। ক্যানসার প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিহার করতে হবে ধুমপান।  তবে অন্যান্য ক্যানসারের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকেরই কমবেশি ধারণা থাকলেও হাড়ের ক্যানসারের সঙ্গে আমরা ততটাও পরিচিত নই। হাড়ের মধ্যে টিস্যুর অস্বাভাবিক ভর বা টিউমার গঠনের একটি অবস্থা হাড়ের ক্যানসার নামে পরিচিত।  হাড়ের ক্যানসার শরীরের যেকোনো অস্থিতেই হতে পারে কিন্তু সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাহু ও পায়ের দীর্ঘ হাড়ের মধ্যে।  হাড়ের ক্যানসার একটি বিরল অবস্থা এবং সমস্ত ক্যান্সারের ১% এরও কম। হাড়ের টিউমার যা সৌম্য (ক্যান্সারবিহীন) প্রকৃতির হল ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সারযুক্ত) হাড়ের টিউমারের চেয়ে বেশি সাধারণ।  হাড়ের ক্যানসারের চিকিৎসা সাধারণত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে করা হয়। হাড়ের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি এবং বিকিরণ থেরাপিও ব্যবহার করা যেতে পারে।  হাড়ে ব্যথা অনুভব করলে অনেকেই মনে করেন হয়েতো কোনও আঘাত লাগার কারণে এমনটা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এই রোগের সঙ্গে হাড়ের অন্যান্য রোগকে মিশিয়ে ফেলেন মানুষ। চিকিৎসকদের মতে, যত দ্রুত এই ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু করা যায়, সুস্থ হয়ে ওঠার আশা ততটাই বেশি।  চিকিৎসা শাস্ত্রে বোন ক্যানসার হলো ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যা স্বাভাবিক বোন বা হাড়ের টিস্যুগুলোকে নষ্ট করে দেয়। এই মরণব্যাধি মূলত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। কী কারণে বোন বা হাড়ের ক্যানসার হয় তা এখনো নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।  হাড়ের ক্যানসারকে সারকোমা ও লিউকেমিয়া এই দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। সারকোমা হলো হাড়, পেশি, কারটিলেজ এবং রক্তনালিগুলোর মতো সংযোগকারী টিস্যুগুলোর একটি ক্যানসার। আর লিউকেমিয়া হলো হাড়ের মজ্জার একটি ক্যানসার যা রক্ত কোষ গঠন করে।  আমাদের শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে কিনা তা আগে থেকে কেউ বলতে না পারলেও শরীরে এর উপস্থিতি একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে। এই বিষয়ে গবেষকরা বলছেন বেশকিছু লক্ষণ আছে যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার বোন বা হাড়ের ক্যানসার হয়েছে কি না।  হাড়ের ক্যানসারের ক্ষেত্রে হাড়ের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা হবে। এই ব্যথা প্রথমে হালকাভাবে শুরু হবে। তারপর অসহ্য যন্ত্রণা রোগী অনুভব করবে। এছাড়া হঠাৎ করে কোনো জায়গা পুঁজ জমে যাওয়ার মতো ফুলে ওঠাও হাড় ক্যানসারের একটি লক্ষণ। যদি শরীরে হাড় ক্যানসারের বীজ থাকে তবে আচমকা হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা হাঁটাচলা বা নড়াচড়ায় অসুবিধা বোধ করেন।  হাড়ের ক্যানসার রোগের আরও কিছু লক্ষণ হলো ওজন কমে যাওয়া, ফ্যাটিগ, আলসে ভাব, ঘন ঘন জ্বর, অ্যানিমিয়ায় ভোগা, দুর্বলতা অনুভব করা। দেহের হাড়গুলোর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির দ্বারা এই চিকিৎসকরা শনাক্ত করেন।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন যখন হাড়ের স্বাভাবিক কোষ ক্যানসার আক্রান্ত বা ম্যালিগন্যান্ট হয় তখন রোগী এই রোগে আক্রান্ত হয়। আবার শরীরের অন্য স্থানের যেমন ফুসফুস, স্তন বা প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যানসার কোষ থেকেও হাড়ের ক্যানসার হতে পারে।  হাড়ে ক্যানসার বাসা বাঁধলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। সামান্য আঘাতেই হয়ে যায় ফ্র্যাকচার। সামান্য চোট-আঘাতেই হাড়ে ফাটল ধরে। আপনারও এমন সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।  এই ক্যানসারের ক্ষেত্রে হাড়ের ব্যথা হয় সাংঘাতিক। কোনও চোট-আঘাত না পাওয়া সত্ত্বেও হাড়ে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়ার পাশাপাশি যদি ব্যথা হওয়ার স্থান অনেকটা ফুলে যায়, তা হলে এটি সাধারণ হাড়ের সমস্যা নাও হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে শরীরের কোনও অংশে ফোলা ভাব থাকলে তা উপেক্ষা করবেন না।  হঠাৎ শরীরের কোনও অংশ অবশ হতে শুরু করলে সতর্ক হতে হবে। কারণ এই সমস্যার পিছনেও হতে পারে ক্যানসারের ঝুঁকি।  আর্থ্রাইটিসের সমস্যা থাকলে হাত-পা নড়াতে সমস্যা হয়। গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা হলে ফেলে রাখবেন না, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সব সময়ে হাত-পা নড়াতে না পারার সঙ্গে আর্থ্রাইটিসকে যোগ করবেন না। এটি হতেই পারে হাড়ের ক্যানসারের লক্ষণ। তাই সাবধান থাকুন।

সর্বশেষ