• ২০২৫ Jul ০৬, রবিবার, ১৪৩২ আষাঢ় ২২
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

এখনো অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ!

  • প্রকাশিত ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন রবিবার, Jul ০৬, ২০২৫
এখনো অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ!
File
মতিউল ইসলাম (মতি)

এখনো অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ!


মতিউল ইসলাম(মতি) :


কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি টিম নিয়মিত অবৈধ ভবন দেখে আসলেও নীরবতা পালনে রহস্য কী  ? 


উক্ত এলাকায় একাধিক পাহাড় কাটার অভিযোগ,  পাহাড় কেটে অবৈধ ভবন নির্মাণের অভিযোগ থাকা সত্বেও নেই কোন বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান।  কাদের ইন্ধনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর নীরব ভুমিকা পালন করছে।বিষয়টি জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। 


আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কক্সবাজার শহরে  স্বৈরাচার আওয়ামী সমর্থক নেতাদের সিন্ডিকেটে চলছে পর্যটন জোন কলাতলীতে, প্রতিযোগিতা দিয়ে একের পর এক অবৈধ ভবন নির্মাণের হিড়িক।  দ্বিতলকে করা হচ্ছে বহুতলে,আবার কোথাও সড়ক দখল করে চলছে ভবন নির্মান। অনেকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় নির্মাণ করছে বহুতল ভবন। শুধুমাত্র কলাতলীর সৈকত পাড়া মসজিদের দক্ষিণ পাশের পাহাড়ের লাগোয়া জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে ৫/৬ তলা বিশিষ্ট ৪ টি ভবন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কউক, চাঁদাবাজ ও কথিত সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য রয়েছে আলাদা টিম সিন্ডিকেট । 

এদিকে কলাতলীর বিশেষ এলাকাকে ইকোলুজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ) ঘোষণা করা হলেও কেউ মানছেনা এই আইন।কক্সবাজার সৈকত থেকে  উপরে ৩০০ মিটারে নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ভবন তৈরীতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) ও জেলা প্রশাসন এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের সঠিক অনুমতির ও  প্রয়োজন মনে  করছেন না প্রভাবশালীরা।

কয়েকদিন পূর্বে সৈকত পাড়া জামে মসজিদের পাশে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়-মসজিদের দক্ষিণ পাশেই আবাসিক হোটেল রিগ্যাল হোমের অনতিদূরে খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড়ি জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে একটি বহুতল ভবন। ইতিমধ্যে ভবনটি ছয়তলা পর্যন্ত ছাদ ঢালাই করা হয়েছে। সৈকত পাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, এ ছয়তলা ভবনটি নির্মাণ করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা উক্ত এলাকার ৪-৬জন দোকানদার। উক্ত দোকানদাররা জানান এ ভবনটি দোকান মালিক সমিতির আওতাধীন করা হচ্ছে, এবং উক্ত এলাকার সমাজ কমিটির সদস্যগণ  অবগত আছে এবং তারা দেখাশোনা ও করে বলে জানিয়েছে। উক্ত ভবন নির্মাণ কারীরা এদিকে উক্ত ভবনের ঠিক সামনে অবস্থিত চা  দোকানদার ভুট্টো জানান উক্ত ভবন নির্মানের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছে।  এবং উক্ত ভবনটি সমাজের অন্তর্ভুক্ত একটি সমিতির উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে। নামধারী সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনার কোন  বিষয় জানার থাকলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। পরিবেশ অধিদপ্তর ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবনটি নির্মাণের বিষয়ে অবগত বলেও দাবী করেন  তারা।


অন্য দিকে ঠিক একই গলিতে দুইশো গজের মধ্যে রয়েছে ম্যারিন পার্ক কটেজ। এটি দুই তলা হলেও সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ৫ তলা পর্যন্ত কাজ চলমান রয়েছে। গত ১ মাসের মধ্যে ৪ টি ছাদ ঢালাই শেষ করেছে কটেজের মালিক। এখানেও রয়েছে কউক ও সাংবাদিক ম্যানেজের কথা বলে  টাকা হাতিয়ে নেয়া  একটি সিন্ডিকেট । বিনা বাধায় চলছে ভবনের নির্মান কাজ। গেল কয়েক বছর ম্যারিন পার্ক কটেজ বহুতল করার চেষ্টা ব্যর্থ হলেও এক মাসের মধ্যেই উঠে গেছে পাঁচ তলা ভবন। অনেকে কউক'কে ম্যানেজ করে এসব ভবন নির্মাণ করছে বলে দাবি করেছেন। 

শুধুমাত্র সৈকতপাড়া মসজিদ এর পেছনের গলিতে আধা কিলোমিটার এর মধ্যেই গড়ে উঠছে অর্ধ ডজন অবৈধ ভবন। গণপূর্তের নির্মিত শিশু উদ্যানের পিছনের গলিতেই গেলে দেখা মেলে এসব অবৈধ ভবন নির্মাণের হিড়িক। ভবন মালিকের অনেকেই নিজেদের নিবন্ধিত জায়গায় নির্মাণের দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে এসব জায়গা খাস খতিয়ানভুক্ত বলে জানান অনেকে। 


স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ করে জানিয়েছেন, কলাতলীর সাতটি পয়েন্টে সুযোগ বুঝেই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ভবন মালিকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্মাণ করা হচ্ছে সৈকত পাডা মসজিদ সংলগ্ন পেছনের গলির উভয় পাশের এক কিলোমিটার জায়গায়। কেউ একতলা ভবনকে পাঁচ তলায় রূপান্তর করছে, আবার অনেকেই নতুন করে বহুতলভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি জায়গায় এবং সম্পূর্ণ পাহাড়ের সাথে লাগোয়া কিভাবে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে , সেটি অনেকের কাছে বিস্ময়। অনেকটা প্রতিযোগিতা দিয়েই চলছে এসব ভবন নির্মাণের কাজ। অনেকের অভিযোগ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র স্মরণ আবাসিক এলাকার মধ্যেই নজরদারি বাড়িয়ে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু সৈকত পাড়ার আশেপাশের এলাকায় গণহারে বেড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিস্প্রভ ভূমিকার কারণে সহজেই এসব অবৈধ ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করার জন্য রয়েছে  একটি সিন্ডিকেট। ঐ সিন্ডিকেট প্রতিটি ভবন থেকে গণহারে চাঁদাবাজি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। 


উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কতিপয় কর্মকর্তা ভবন নির্মাণের খবর জানার পরেও অজ্ঞাত কারণে চুপ রয়েছেন বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। কতিপয় কর্মকর্তা ভবন নির্মাণস্থল পরিদর্শনে এসে ম্যানেজ হয়ে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র। 


এ ব্যাপারে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন  জানান, ওই লোকেশনে অবৈধ ভবণ নির্মাণের বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। আমি আগামীকালের মধ্যেই একটি টিম পাঠাবো। তারা খবরা-খবর নিয়ে অবৈধ হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি এই বিষয়ে কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। সর্বোচ্চ সততা এবং পেশাদারিত্বের মধ্যেই আমি কাজ চালিয়ে যাব।

সর্বশেষ