যে কোন পরিস্থিতির বিনিময়ে অপরাধীদের দমন করা হবে অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ
মতিউল ইসলাম (মতি)
অপরাধ মুক্ত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা অপর শিম।
পর্যটন অধ্যুষিত কক্সবাজারে নানামুখী সেবামূলক কার্যক্রম, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন।
সেবামূলক কাজের পাশাপাশি মাদক কারবারি, ডাকাত ও ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারে ঈর্ষণীয় সফলতা দেখিয়েছে বাহিনীটি। তারা কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে সেগুলো সুচারুভাবে বাস্তবায়ন করছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) স্থাপনসহ নানা ধরনের নিরাপত্তামূলক প্রযুক্তি স্থাপন করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
নিয়মিত টহলের পাশাপাশি পর্যটকদের সেবায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে তারা। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় বহু এলাকা ট্যুরিস্ট পুলিশের সার্ভিল্যান্সের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশের সেবায় যুক্ত হয়েছে ইন্টারকম ও ইমার্জেন্সি বাটন সার্ভিস। যার নাম দেওয়া হয়েছে 'প্লিজ হেল্প মি'। কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়লেই এই বাটন চাপলে সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকের সেবায় পৌঁছে যাবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদের সৃজনশীল দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।
গত সাত মাস পূর্বে অসামাজিক কার্যকলাপ, ছিনতাইকারী, মাদক কারবারি, কিশোর গ্যাংসহ স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধানসহ পর্যটক হয়রানিকারী ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন। এছাড়া বড়ি ম্যাসাজের অপরাধে ৩৮ জন শিশুকে আটক করে অভিভাবকের জিম্মায় দিয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের হারিয়ে যাওয়া ১০০ শিশুকে উদ্ধার করে আপনজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের হারানো ৬০টি মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া পর্যটকদের হারানো নগদ ৫ লক্ষাধিক টাকা ও চেকবইসহ মানিব্যাগ উদ্ধার করে তাদের হস্তান্তর করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় কক্সবাজার সৈকতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য ৩৮টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীর পয়েন্টে ইন্টারকম সেবার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদের দ্রুত সেবা পেতে প্রেস বাটন সিস্টেম চালুসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে কক্সবাজার রিজিয়নের ট্যুরিস্ট পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সজাবার রিজিয়ন সূত্রে জানা গেছে,
পূর্বে আপেল মাহমুদের দায়িত্ব কালে গত সাত মাস পূর্বে
৪২ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত বোরকাবাহিনীসহ ৮২ জন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুজন, পর্যটক হয়রানির দায়ে একজন ক্যামেরাম্যান এবং ইয়াবাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছিল।
পর্যটকের হারানো জিনিসপত্র ও শিশু উদ্ধার করে গত সাত মাস পূর্বে আলোচনায় আসেন আপেল মাহমুদ। কক্সবাজার সৈকত এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে হারিয়ে যাওয়া ১০০ শিশুকে উদ্ধার করে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। এছাড়া ৬০টি হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধার করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকের হারানোর নগদ অর্থ ও চেকবই এবং মানিব্যাগ উদ্ধার করে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার কথা চিন্তা করে পুরো সৈকত এলাকায় ৩৮টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া তিনটি পয়েন্টে ইন্টারকম সেবার মাধ্যমে পর্যটকদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। পর্যটকদের দ্রুত সেবাদানে প্রেস বাটন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের জনা মোবাইল চার্জিং সিস্টেম চালু, সৈকত এলাকায় হকার নিয়ন্ত্রণে মহড়া এবং অভিযান পরিচালনাসহ বাইনোকুলারের সাহায্যে পানিতে তলিয়ে যাওয়া পর্যটক উদ্ধার এবং পর্যটকদের গভীর পানিতে না যেতে সতর্ক করছে পুলিশ।
এছাড়া সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মাইকিং করে পর্যটকদের সচেতন করা, পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে সবসময় পর্যবেক্ষণ করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। হকারমুক্ত ও পর্যটকদের নানা হয়রানি বন্ধে ২৪ ঘণ্টা সৈকতে মোটরবাইক টহল অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্রসৈকতে ভেসে আসা অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার এবং পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে থাকে ট্যুরিস্ট পুলিশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হারিয়ে যাওয়া নারী ও শিশুদের উদ্ধার করে যথাযথ অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেওয়া ও পর্যটকদের সুবিধার জন্য তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে কক্সবাজারে।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ (কক্সবাজার রিজিয়ন) জাতীয় দৈনিক ভোরের কথার প্রতিবেদককে বলেন, 'ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাগ্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সৈকতে কেউ নাশকতা করলে ইমার্জেন্সি কল সেন্টার থেকে সরাসরি সেবা পাবেন পর্যটকরা। একজন পর্যটক যেকোনো দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কবলে পড়লে বা অন্য কারও সমস্যা দেখতে পেলে আমাদেরকে একটা বাটনে ক্লিক করলেই আমরা পৌঁছে যাব সেখানে।
এক প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন,'আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং হয়রানি রোধে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সৈকতের সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সাপ্তাহিক ও মাসিক মিটিং করে থাকি এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। কক্সবাজারে ঘুরতে এসে যাতে কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনো অবস্থায়ই পর্যটকদের কোনো ধরনের হয়রানি বরদাশত করা হবে না।'
পার্শ্ববর্তী দেশের মানের তুলনায় আমাদের দেশের হোটেলের মান অনেক ভালো ? ট্যুরিস্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা হিসেবে মূল্যায়ন জানতে চাইলে আপেল মাহমুদ বলেন, 'অবশ্যই পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমাদের দেশের হোটেলগুলোর মান অনেক ভালো ও উন্নত এবং খরচও কম।
যেমন যদি আপনি কক্সবাজারের ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে থাকেন, সেখানে আন্তর্জাতিক মানের যেসব সার্ভিস দিয়ে থাকে, সে তুলনায় খরচ খুবই কম।'
জানা গেছে, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট ট্যুরিজম এবং সাসটেইনেবল ট্যুরিজমের আপেল মাহমুদ কক্সবাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
তার ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার অর্জিত পুরস্কারসমূহ: আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার, নেপাল বেস্ট পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড, মালদ্বীপ বেস্ট আইকনিক অ্যাওয়ার্ড, সাংস্কৃতিক অ্যাওয়ার্ড, গ্রিন লাইক বেস্ট পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট অ্যাওয়ার্ড, নারী দিবস অ্যাওয়ার্ড, কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি ও স্বাধীনতা স্মৃতি সম্মাননা পুরস্কার।অর্জন করেছেন, তিনি আবারো হাটি হাটি পা পা করে দীর্ঘ সাত মাস পর কক্সবাজারের দায়িত্ব রয়েছেন।
আবারো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে রংধনুর সাত রং দিয়ে রাঙ্গাবে এমন প্রত্যাশা কক্সবাজার বাসির।
মতামত দিন