দুর্বৃত্তায়ন রুখতে কঠোর অবস্থানে বিএনপি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। দেশের ভিতরে ও বাইরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। কারণ, বিএনপি জনগণের দল। আমাদের জনগণের আস্থায় অর্জনে কাজ করতে হবে। দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংস করে দিয়ে গেছে স্বৈরাচার হাসিনা।
আগামীর সরকারের জন্য দেশ চালানো হবে এক চ্যালেঞ্জ। কাজেই, আগামীতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরতে পারবে না। এ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি আরোও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ গ্রহণ করা যাবে না। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সকল প্রতিশোধ নেব। ৩১ দফার বাস্তবায়নই বড় প্রতিশোধ। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। এজন্য আমাদের দায়িত্বও সবচেয়ে বেশি।
এ সময় খন্দকার মুক্তাদির আরোও বলেছেন, বাংলাদেশকে পুনর্গঠন ও জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করাই বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যে বাধা এলে দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দুর্বৃত্তায়ন প্রতিরোধে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি কঠোর অব¯’ান গ্রহণ করবে। দুর্বৃত্তায়ন মোকাবিলায় ঐক্যই সর্বোত্তম অস্ত্র। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নগরীর চৌকিদিঘীতে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সিলেট জেলা ও মহনগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গসহযোগি সংগঠনের যৌথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতির বক্তব্যে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে যেকোনো ধরনের বাধা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের ভেতরে কেউ এই অপতৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকলে কিংবা কোনো নেতার প্রশ্রয়ে অনুপ্রবেশকারীরা সক্রিয় হলে, তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। ৩১ দফার মাধ্যমে এদেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখার জন্য নিজেদের কাজ করতে হবে। আমাদেরকে শুধুই জনগণের কথা চিন্তা করে কাজ করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সকল জুলুম নির্যাতনের প্রতিশোধ নেব।
সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান কালে মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে দলের নেতাকর্মীদের এক থাকতে হবে। বিগত ১৭ বছর অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের শিকড় অনেক গভীর পর্যন্ত গ্রোথিত হয়েছে। প্রত্যেকটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের নিচের স্তর থেকে একেবারে উপরের স্তর পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর। তারা সুযোগ খুঁজছে ছোবল মারার। সেই দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। বিএনপির বা অঙ্গ সংগঠনের কেউ অপরাধীদের আশ্রয় দিলে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় পর্যায়ে পাড়া-মহল্লা কিংবা বাজারভিত্তিক গোষ্ঠী তৈরি করে দলীয় শৃঙ্খলা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা বন্ধ করা হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন।
এ সময় এমরান চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা হাসিনাকে পরাজিত করতে পেরেছি, পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। কিন্তু আমাদের সবকিছু ফ্যাসিস শেষ করে দিয়ে গেছেন। ফ্যাসিসের একেকজন মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যাংকে লেনদেন পাওয়া যাচ্ছে হাজার কোটি টাকার। তারা গোটা দেশকে, গোটা জাতিকে আওয়ামী লুণ্ঠনের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
এ সময় ইমদাদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের হাত দিয়ে বার বার গণহত্যা হয়েছে। শেখ হাসিনার বাবা বাকশাল করেছিলেন আর সে দ্বিতীয় বাকশাল তৈরি করেছিলেন। তার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের ছাত্রদল, যুবদলের নেতাদের ধরে ধরে নিয়ে এসে হত্যা করেছিল। যারা গণতন্ত্রের জন্য কর্মসূচি পালন করেছে, তাদের হত্যা করেছে। তাদের বিচার হবেই ইনশাআল্লাহ।
যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, মহানগর যুবদলের সভাপতি শাহ নেওয়াজ বখত চৌধুরী তারেক, জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মুর্শেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খান, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা সম্রাট হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন দিনার।
উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, মহানগর যুবদলের সিনিয়ল সহ-সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বেলাল, কামরুর হোসেন হেলাল, উমেদুর রহমান উমেদ, রাশু আহমদ, উসমানী গণি, জিএম আব্বাস, সাইফুর ইসলাম, আজিজ খান সজিব, ময়নুল ইসলাম, লায়েক আহমদ, লুৎফুর রহমান, নজরুল ইসলাম, আবির হাসান মুহিন, মেহেদী হাসান সপু, আব্দুল মুনিম, প্রাণেশ দেব, মামুন আহমদ মিন্টু, কবির উদ্দিন, মির্জা জাহেদুর রহমান, কয়েছ আহমদ, গোলাম রাব্বনী, এমদাদুল হক স্বপন, আব্দুল মোতাক্কাবির চৌধুরী সাকি, উসমান হারুন পনির, কল্লোল জ্যোতি বিশ্বাস, সুলেমান খাঁ, শফিকুল ইসলাম আমিনুল ইসলাম আমিন, আলী মো. নুরুল হুদা দিপু, সৈয়দ সারওয়ার রেজা প্রমুখ।-বিজ্ঞপ্তি
মতামত দিন