-হ্যালো আব্বু তুমি কোথায়?
সেই কণ্ঠস্বর পুরো পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছে!
মতিউল ইসলাম( মতি)
বলছিলাম কক্সবাজার টেকনাফের সাবেক কাউন্সিলর একরামুল হকের কথা।তখনকার
সময় ২৬ মে ২০১৮
. আব্বু তুমি কোথায়?
- আমি এই যে, অফিসে যাচ্ছি তো,
- চলে আসবো আম্মু।
- কতক্ষণ লাগবে?
- এইতো, বেশিক্ষণ লাগবে না। আমি চলে আসবো, ইনশাল্লাহ ঠিকাছে? ঘুমাও।
মেয়ে- হ্যালো আব্বু, আব্বু?
একেরাম- হ্যালো আম্মু, আমি নীলা যাচ্ছি, নীলা।
মেয়ে- ক্যানো?
- জরুরী কাজে যাচ্ছি (অসহায় কন্ঠে বললেন ), যাচ্ছি আম্মু, গাড়িতে আছি তো।
- মেয়ে-আব্বু তুমি কান্না করছো যে?
এরপর আর মোবাইল রিসিভ করছে না -
- ( স্ত্রী ) আল্লাহ আমার মোবাইলটা যেন ধরে, আমাকে একবার কথা বলতে দাও খোদা...
ফোন রিসভড হয়, বাতাসের শব্দ। এ পাশ থেকে হ্যালো হ্যালো কে বলতে থাকেন একজন। ওপাশ থেকে অনেক ধরনের শব্দ।
হঠাৎ দুই-তিন ব্যাক্তির কথা শোনা যায়। এপাশ থেকে একজন স্ত্রীর আর্তনাদের চিৎকারের বিকট শব্দ।
আবারো কিছু নাটকীয় কথাবার্তা, কিছুক্ষণ পর
বন্দুক লোডের শব্দ সাথে সাথে ফায়ার।
গুবিদ্ধ ব্যক্তির আর্তনাদ! আবার গুলি।
ফোনের এপাশ থেকে স্ত্রী, সন্তানের কান্নার আহাজারি পুরো পৃথিবী কে নাড়া দে।
এরপর নাটকীয় হুইসেল এর শব্দ, অকাথ্য ভাষায় তিরিস্কার ধর ওরে ধর সেই বন্দুকযুদ্ধের নাটকীয় ফাইনাল খেলা।
ফোনের নাটকের স্ক্রিপ পুরোটা রেকর্ড হয়ে যায়।
এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি হলেন টেকনাফের সাবেক কাউন্সিলর একরামুল হকের। ঠান্ডা মাথায় কিভাবে 'বন্দুকযুদ্ধের' নাটক সাজানো হয় তার একটি উদাহরন ছিলো এই ফোন রেকর্ডিং। তাকে ডেকে নিয়ে যেয়ে একজন নিরীহ মানুষকে কিভাবে পরিকল্পিত হত্যা করাহলো।
তার একটি উদাহরণ হিসেবে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে,একরামের মৃত্যুর ঘটনা।
রেকর্ডিং এর শেষ অংশে স্ত্রী ও মেয়েদের বলতে শোনা যায় " আম্মু ফিরে আসবো।সেই থেকে এখনো আর ফিরা হলোনা সাবেক কাউন্সিলরের।
কিন্তু একরাম ততক্ষণে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
নিজেদের অজান্তে আরো কত মায়ের বুক খালি করেছে ওই হায়নার দল তৎকালীন কথিত RAB সদস্যরা।
যারা কক্সবাজার টেকনাফ থেকে ইয়াবা নির্মূল নামে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার একটি প্রমাণ টেকনাফের সাবেক বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাস।
টাকা দিতে পারলে ক্রসফায়ারের থেকে বাদ গেছে,টাকা দিতে না পারলে বন্ধুকরে নলে প্রাণ দিতে হয়েছে অনেক নিরীহ লোকজনদের।
সাধারণ জনতার প্রশ্ন? এখন সেই বিতর্কিত প্রশাসনের সদস্যরা কোথায়, তাদেরকে সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল।
মতামত দিন