• ২০২৫ এপ্রিল ১৫, মঙ্গলবার, ১৪৩২ বৈশাখ ২
  • সর্বশেষ আপডেট : ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

রামুর গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে সুপারির গাড়ি ডাকাতি কে কেন্দ্র করে শাহিন বাহিনীর তান্ডব

  • প্রকাশিত ০৬:০৪ অপরাহ্ন মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
রামুর গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে সুপারির গাড়ি ডাকাতি কে কেন্দ্র করে শাহিন বাহিনীর তান্ডব
File
মতিউল ইসলাম (মতি)

রামুর গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে সুপারির গাড়ি ডাকাতি কে কেন্দ্র করে শাহিন বাহিনীর তান্ডব


কক্সবাজার প্রতিনিধি 

গত কাল শুক্কুরবার ১১ই এপ্রিল রাত ৯ টা থেকে কক্সবাজার রামু গার্জনিয়ার উত্তর বড়বিল ,হাজির পাড়া, জারাল্যাঝিরি ও বাইশারীর দক্ষিন বাইশারী মগেরখীল নামক স্থানে রামুর গর্জনিয়ার শাহিন বাহিনীর শাহিনের নেত্বেত্বে তুমুল গুলাগুলি হয়। স্থানীয়নের মতে শুক্কুরবার আছরের পর থেকে গর্জনিয়া থেকে শাহিন বাহিনীর সদস্যরা কয়েকটি গ্রুপে হয়ে উত্তর বড়বিলের পার্শবর্তী পশ্চিম মুড়ায় অবস্থান নেয়। এসময় শাহীনকে সাদা নোহা কার করে ভারী অস্ত্র সহ তার সদস্যদের নেত্বত্ব দিয়ে বড়বিলে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। রাত একটু গভীর হতে হতেই তার সদস্যরা চলে আসে আস্তে আস্তে দক্ষিন বাইশারী জুনাইদের বাড়ির আশপাশে। শুরু হয় শাহিন বাহিনীর বর্বরোচিত গুলিবর্ষণ। আতংকিত হয়ে দিকবেদিক ছুটাছুটি করে গর্জনিয়া, বাইশারী এলাকার শত শত মানুষ। এসময় শাহিন বাহিনীর সদস্যরা অত্যাধুনিক যুদ্ধঅস্ত্র একে ৪৭ রাইফেল দিয়ে টানা ৩০০-৩৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। আহত হয় জারাল্যাঝিরি মো. হোছনের ছেলে আব্দুশুক্কুর, আব্দু শুক্কুরের ছেলে ছাবের সহ আরও অন্তত ৫ জন মানুষ। সন্ত্রাসী বাহিনীর টার্গেট ছিল দক্ষিন বাইশারীর জুনাইদ। তাকে বাড়িতে না পেয়ে এলাকাবাসীর উপর চলে গুলিবর্ষণ।

ঘটনার সুত্রপাতঃ গত ৮ই এপ্রিল শাহিন বাহিনীর সদস্য মো. রফিকের ছেলে মো. রাকিবের নেত্বত্বে গর্জনিয়া বাইশারী সড়কে সুপারির একটি টমটম গাড়ি ডাকাতি করে জুনাইদের প্রতিবেশী শামশুল আলমার ২ লক্ষটাকার সুপারি ডাকাতি করে নিয়ে গেলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় জুনাইদ সন্ত্রাসীদের সুপারি সহ ধরে ফেলে। তখন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডাকাতদের একটা স্বীকারোক্তি ভিডিও দেখা গেছে। সেখানে শাহিন ডাকাতের সহযোগী সদস্য ও শাহিন ডাকাতের খালাত ভাই সাবেক ছাত্রলীগের গর্জনিয়া ১নং ওয়ার্ড সভাপতি রাকিব নিজেই বলেছে তারা সুপারির গাড়ি ডাকাতি করে কোথায় রেখেছে। পরে সুপারিশগুলো উদ্ধার করে জুনাইদ। এসময় স্থানীয় জনতা ডাকাতদের উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় শাহিন বাহীনির সদস্য মো. রাকিব সুপারি ফেরত দেয়া ও তাকে গণধোলাই দেওয়ার জন্য জুনাইদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। জুনাইদের উপর প্রতিশোধ নিতে মুলত শাহিন ডাকাতের এমন বর্ববরতা বলে জানাগেছে।

স্থানীয় বাইশারী ইউনিয়ন যুবদল নেতা জসিমউদ্দিন জানান, শাহিন বাহিনী গত কয়েকমাস আগে নারিছবুনিয়া যুবদল নেতা মুফিজ ও মখছুদের বাড়ি সহ আরও ৫-৬ বাড়িতে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এসে হামলে পড়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়, তাদের পরিবারের অনেক আহত হয়েছিল তখন। এখন আবার দেখছি বাইশারী বিএনপির একজন এক্টিভ কর্মী জুনাইদের উপর এভাবে হামলা করছে। এটা প্রসাশনের ব্যর্থতা। বাইশারী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল করিম বান্টু জানান, গত রাত যেভাবে টানা গুলিবর্ষণ করা হয়েছে, তাতে আতংকিত হয়ে দোকান পর্ট বন্ধ রেখে পালিয়ে গেছে ব্যবসায়ীরা। গুলি অনেক খোসা বাজারে এসে পড়েছে।

জুনাইদের মা জানান, তার ছেলেকে না মেরে শাহিন যেন তাকে মেরে ফেলে। মা বেচে থাকতে ছেলের মৃত্যু তিনি সইতে পারবেন না। জুনাইদের স্ত্রী জানান, গত রাতে তাদের উপর শাহিন বাহিনী যেভাবে আক্রমণ করেছে, তাতে তিনি খুবই ভয়ে আছে। তার ছোট ছোট শুরুরাও কিছুক্ষণ পর পর ভয় পাচ্ছে। তিনি প্রসাশনের কাছে বিচার চান। স্থানীয় আরও অনেকেই এ ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন।


এদিকে শাহিন ডাকাতের সকল অপকর্ম ধামাচাপা দিতে শাহিন ডাকাতের মাসিক মাসোয়ারা নেওয়া কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনার পর পর একই রকমের একাধিক পোস্ট ফেইসবুকে দিয়ে মানুষকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে। 


এদিকে আজ সকাল ৯ টায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক ঘটনাকবলিত দক্ষিন বাইশারী জুনাইদের ঘর বাড়ি পরিদর্শন শেষে বলেন, এটা খুবই ভয়াবহ অবস্থা। এভাবে চলতে দেওয়া যায়না। আমি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


রামু থানার ওসি ইমন কান্তি বলেন এই ঘটনার খবর পেয়েছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের এজহার বা অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


স্থানীয়দের দাবী দ্রুত শাহিন ডাকাতকে আইনের আওতায় আনতে না পারলে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বলতে বাকি থাকবে না। তাই তাকে দ্রোত গ্রেপ্তার করতে হবে।

সর্বশেষ