। বহু প্রত্যাশিত ঢাকা-সিলেট ছয় লেন প্রকল্পের আওতায় নরসিংদীতে ভূমি অধিগ্রহণে ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি এবং হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং ভুক্তভোগীরা বলছেন, এই প্রকল্পের কারণে বহু মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। তাদের অভিযোগের তীর বিশেষ করে কানুনগো আব্দুল জলিল এবং রেকর্ড কিপার বৃন্দাবন বাবুর দিকে।
সুধীর সাহার সংবাদ সম্মেলন: ঘুষ না দিলে জমির ন্যায্য মূল্য নেই
নরসিংদীর স্বনামধন্য অন্নপূর্ণা অয়েল মিলের মালিক সুধীর সাহা সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি জানান, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই একটি চক্র সক্রিয় হয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা অধিগ্রহণ করা জমি এবং স্থাপনার তালিকা তৈরির সময় জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করে। যারা ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানান, তাদের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে (যেমন, আবাসিক বা বাণিজ্যিক জমিকে কৃষি দেখানো) অথবা স্থাপনার অবমূল্যায়ন করে কম ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হচ্ছে। ফলে, জমির ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।
কানুনগো জলিল ও বৃন্দাবন বাবুর বিরুদ্ধে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
অভিযোগ অনুযায়ী, কানুনগো আব্দুল জলিল ও রেকর্ড কিপার বৃন্দাবন বাবু এই জালিয়াতির মূল হোতা। অভিযোগকারীদের দাবি, বৃন্দাবন বাবু জমির শ্রেণি পরিবর্তনের কাজটি করেন এবং আব্দুল জলিল সকল কাগজপত্র চূড়ান্ত করেন। এর আগেও বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবর্তিত হলেও আব্দুল জলিল এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
সাত্তার ভূঁইয়া নামে একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন যে, তিনি জলিলকে ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। একই সাথে, ঝরনা ফিট নামক একটি প্রতিষ্ঠান মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ১৬ কোটি টাকার বিল নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। মকবুল হোসেনও মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এক হিন্দু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, তিনি চাহিদা অনুযায়ী ঘুষের টাকা দিতে না পারায় তার দলিল ও
পর্চা বাইরে এলে শাখার নরসিংদী অঞ্চলের হিন্দু মাফিয়াদের নামে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। এই মাফিয়ারা বিভিন্ন স্থাপনা ও মিল-ফ্যাক্টরি দেখিয়ে শত কোটি টাকার বিল নিয়েছে। এই চক্রের মূল কারিগর হিসেবে আব্দুল জলিলের নাম উঠে এসেছে।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান
ভুক্তভোগীরা এই বিষয়ে দ্রুত নজরদারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা চান, এই দুর্নীতির অবসান হোক এবং সাধারণ মানুষ যেন তাদের প্রাপ্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পান।
এই বিষয়ে কানুনগো আব্দুল জলিলের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তিন দিন তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসে এসে কথা বলবেন বলে জানান।
মতামত দিন