নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি প্রত্যেক অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুর অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আরও মমতাময়ী, যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও মমতা দিয়ে গড়ে তোলা হলে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের দক্ষ জনসম্পদে পরিণত হবে।’
শুক্রবার (২ এপ্রিল) ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২১’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৪তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তি এবং তাদের পরিবার ও পরিচর্যাকারীদের শুভেচ্ছা জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের প্রতিপাদ্য “মহামারিত্তোর বিশ্বে ঝুঁকি প্রশমন, কর্মক্ষেত্রে সুযোগ হবে প্রসারণ” অত্যন্ত সময়োপযোগী হযেছে বলে আমি মনে করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কল্যাণে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট বিধিমালা ২০১৫, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা ২০১৫, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন ২০১৮ এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এসব আইনের সফল বাস্তবায়নে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এর নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজম বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টিসহ দেশের অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে তাদের অন্তর্ভূক্তি তথা ক্ষমতায়নকে বিশেষ প্রাধান্য দিতে তাদের জন্য বিশেষ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং মূলধারার বিদ্যালয়সমূহে যেন অন্তর্ভূক্তিমূলক পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র স্থাপন করেছি। পাশাপাশি, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সকল প্রতিবন্ধী মানুষকে শতভাগ ভাতার আওতায় আনা হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তিসহ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সকল প্রতিবন্ধী মানুষের যোগাযোগ, শিক্ষা, সামাজিক দক্ষতা, স্পিচ বা ল্যাঙ্গুয়েজ দক্ষতা উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ সকল কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনা মহামারিতে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির অনলাইন প্রশিক্ষণ ও ক্লাস এবং সুযোগ-সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমি প্রত্যাশা করি, বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় আমাদের সরকার গৃহীত নানামুখী উদ্যোগের ফলে তাদের জীবন আরো উন্নত ও আনন্দময় হবে। আমি বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২১ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।’
মতামত দিন