• ২০২৪ মে ২১, মঙ্গলবার, ১৪৩১ জ্যৈষ্ঠ ৭
  • সর্বশেষ আপডেট : ০১:০৫ পূর্বাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

রাজারহাটের চাকিরপশার নদী দখলমুক্ত, খনন শুরু, এলাকাবাসীর মুখে হাসি

  • প্রকাশিত ১০:০৫ অপরাহ্ন মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪
রাজারহাটের চাকিরপশার নদী দখলমুক্ত, খনন শুরু, এলাকাবাসীর মুখে হাসি
ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ আব্দুল কাদের, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

০৫.০৫.২০২১

দীর্ঘ প্রায় চার বছরের আন্দোলনের পর অবশেষে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার নদী দখলমুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে প্রথম দফা খনন কাজ। মঙ্গলবার (৪ মে) উপজেলার বোতলার পাড় বটতলা বাজার এলাকায় নদীর উজান মুখে এ খনন কাজ শুরু হয়। রংপুর অঞ্চলে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এ খনন কাজ শুরু করে। 

খনন কাজের শুভ  উদ্বোধন করেন রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান মণ্ডল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির সমন্বয়ক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ এবং নদী সুরক্ষা কমিটির নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন।

চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির সমন্বয়ক, নদী গবেষক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ৩৫-৪০ বছর আগে এটি ভাটিতে বুড়ি তিস্তা এবং উলিপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতো। এর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৪০ কিলোমিটার। উলিপুরের থেতরাই নামক জায়গায় তিস্তা নদী এই নদীর ভেতর ঢুকে যাওয়ার কারণে নদীটি দ্বিখণ্ডিত হয়। ইটাকুরি নামক জায়গা থেকে উলিপুরের থেতরাই পর্যন্ত নদীটির দৈর্ঘ্য এখন প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই দৈর্ঘ্যে নদীর অনেক জায়গায় পানি বাধাগ্রস্ত হয় এবং এই অঞ্চলের প্রায় ৮-১০টি মৌজার ২৫ হাজার একর জমির ধানের আবাদ বাধাগ্রস্ত হয়। এছাড়াও এই নদীর তিন-চার কিলোমিটার ভেতরে সাধারণ জেলেরা মাছ ধরতে পারে না। খনন কাজ শুরুর ফলে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ সৃষ্টি হয়ে জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং মানুষ তাদের জমিতে ফসল ফলানোর পাশাপাশি নদীটি তার প্রাণ খুঁজে পাবে।

তিনি আরও বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের কাছে আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ থেকে এখানকার পানি নেমে যাওয়ার একটি পথ তৈরি হলো।  আমরা আশা করছি, বিএডিসি এই খাল খননে যে প্রকল্প নিয়েছে তা মানসম্পন্ন হবে এবং কৃষি ও জীববৈচিত্র্য উপকৃত হবে।

 চাকিরপশার দীর্ঘ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে চাকিরপশার নদী  সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ বলেন, প্রথমে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে স্বারকলিপি দেওয়া হয় তারপর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছেও স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও মানববন্ধন, খুলিবৈঠক, সাংবাদিক সম্মেলন, বিক্ষোভসহ চাকিরপশার নদী রক্ষায় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।  নদীর উৎসমুখে ইটাকুড়ির দোলায় প্রায় ২৫ হাজার একর জমি আছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণে যেখানে বছরে একবার ধান আবাদ হতো। এই খাল খনন হলে পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহের ফলে জলাবদ্ধতা দূর হয়ে এখন প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ ধান উৎপাদন সম্ভব। প্রায় ১২২ জন দখলদারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া নদী পুনরুদ্ধার আন্দোলনটি বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সফল হতে চলেছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইটাকুড়ির দোলা সংলগ্ন আঙ্গাধোয়ার ব্রিজ থেকে দক্ষিণ দিকে একই ইউনিয়নের নলাডাঙার ব্রিজ পর্যন্ত  সিএস রেকর্ড অনুযায়ী দুই কিঃমিঃ প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এই নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বিএডিসি।

সর্বশেষ