নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হেলিকপ্টার অবতরণের স্থানে বোমা পুঁতে রাখার অভিযোগে করা মামলার রায়ে ১৪ জঙ্গীকে মৃত্যুদ- প্রদান করেছে আদালত। আদালত রায়ে ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে তাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া আসামিদের মৃত্যুদ- কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোন অসুবিধা থাকলে প্রচলিত নিয়মানুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১৪ আসামির মধ্যে ৯ জন কারাগারে রয়েছে। বাকি ৫ জন এখনও পলাতক।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে গণতান্ত্রিক ও বৈধ সরকার উৎখাত করার উদ্দেশ্যে কোটালিপাড়ার সভা মঞ্চে বোমা পুঁতে রাখা হয়। স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের পর থেকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এমনকি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে ধ্বংস করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। বারবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। হুজি, জেএমবি ও ইসলামী জঙ্গীরা যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে সেই জন্য তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে বলেও রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়।
২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারী আদর্শ কলেজের প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী একটি বোমা পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর একটি দল মাটি খুঁড়ে ৭৬ কেজি ওজনের ওই বোমা উদ্ধার করে। পরদিন ২৩ জুলাই ৪০ কেজি ওজনের আরেকটি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র-রাষ্ট্রদ্রোহ ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা করে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ১০ জঙ্গীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- প্রদান করে। এছাড়াও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করেন। হাইকোর্ট চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১০ আসামির সাজা বহাল রেখেছে। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মোঃ বদরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ঐ দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ২০০১ সালের ১৫ নবেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০০৪ সালের ২১ নবেম্বর ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলার রায়ে মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান ১৪ জনকে মৃত্যুদ- প্রদান করেছেন। যাদের মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে তারা হলোÑ মোঃ আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মোঃ লোকমান, মোঃ ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মোঃ এনামুল হক, মোঃ মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মোঃ মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মোঃ রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মোঃ তারেক, মোঃ ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মোঃ আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। মামলার ১৪ আসামির মধ্যে মফিজুর রহমান, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান, তারেক হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, সারোয়ার হোসেন মোল্লা, আনিসুল ইসলাম, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম কারাগারে রয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামি আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ শেখ মোঃ এনামুল হক ও মোছাহেব হাসান পলাতক রয়েছে। সরকার উৎখাতের জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
রায ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রায় ঘিরে সকাল থেকেই আদালত ও আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিদের খোশ মেজাজে দেখা যায়। তাদের মধ্যে কোন অনুশোচনা ছিল না। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা উদ্ধার হওয়ার পরদিন ওই স্থানেই শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক নূর হোসেন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেন।
২০০১ সালের ১৫ নবেম্বর তৎকালীন সিআইডির এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২১ নবেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে আদালত ৫০ জনের মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় ১১ মার্চ। হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
সরকার উৎখাতের জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তারা ॥ মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন শক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়। তারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে ২০ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামানের আদালত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সমাবেশস্থলে বোমা রাখার ঘটনায় দায়ের মামলায় ১৪ আসামির সবাইকে মৃত্যুদ- প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন।
পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, আদালতে মুফতি হান্নানের দেয়া জবানবন্দী অনুযায়ী ২০০০ সালের জুলাই মাসে হুজির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ওই বছরই কোটালিপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ও হেলিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ও ৪০ কেজি ওজনের শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। বিচারক বলেন, ২০০০ সালের ২০ জুলাইয়ে কোটালিপাড়ার ঘটনার পর ২০০১ সালে খুলনায় শেখ হাসিনাকে আবারও হত্যার চেষ্টা করা হয়। হত্যাচেষ্টার তৃতীয় ঘটনা ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটে ও চতুর্থ ঘটনা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায়। হত্যাচেষ্টার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে নৃশংস ও ন্যক্কারজনক এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব বলে আদালত মনে করেন।
মামলার রায়ে সন্তুষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ ॥ আদালতের রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি আবু আবদুল্লাহ ভুঁইয়া তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট। তবে আসামিদের আইনগত অধিকার রয়েছে। তারা চাইলে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল, রিভিউ ও রিভিশন করতে পারেন।’ এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের রায়ে প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
আসামিরা ছিল খোশ মেজাজে ॥ রায় ঘোষণা শেষে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করে। তাদের মধ্যে দুয়েকজন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েই ক্ষুব্ধ হয়ে বলে এ ‘রায় সঠিক নয়’। কয়েকজন আবার রায় শুনে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ বলতে থাকে। আদালত থেকে বের হওয়ার সময় আসামিরা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলে, ‘ছবি তুলেন, ছবি তুলেন’। পুলিশের গাড়িতে উঠানোর পরে আসামিদের একজন বলে, ‘আমরা এই মামলার সঙ্গে জড়িত নই।’
আদালত প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা ॥ কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সমাবেশস্থলে বোমা রাখার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। আদালত চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় পথচারীদের চলাচলে নজরদারি বাড়ায় পুলিশ। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকেই রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায় পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নেয়। আসামিদের আদালতের হাজতখানায় রাখার পর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। নিয়মিত পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি, ডিবি ও সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন করা হয়। এর আগে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে কাশিমপুর ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসামিদের আদালতের হাজতখানায় আনা হয়।
কোটালিপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা আরেক মামলা ॥ হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট বিচারিক আদালত রায় দেন। রায়ে ১০ জঙ্গীর মৃত্যুদ- এবং ১৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- হয়। পরে মামলাটি হাইকোর্টে আসে। হাইকোর্ট চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১০ আসামির সাজা বহাল রেখেছে। রায়ে আদালত বলেছে, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ অপর আসামিরা ষড়যন্ত্র করে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জনসমবেশের পাশের দুটি শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখে। যা আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে। এ জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায় মৃত্যুদ- বহাল রাখা হলো।
তবে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত না থাকায় মামলার এক আসামি সরোয়ার হোসেন মিয়াকে খালাস দিয়েছে উচ্চ আদালত। এছাড়া একজনের যাবজ্জীবন, দুইজনের ১৪ বছর কারাদ- বহাল রেখেছে। এছাড়াও আদালত সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা খাটা হয়ে গেলে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ১৫ আগস্টের পরে ইতিহাসে আরও একটি কলঙ্কজনক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করতে চেয়েছিল জঙ্গীরা। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ এবং আসামিদের আপীল ও জেল আপীল খারিজ করে বুধবার এ রায় দিয়েছে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মোঃ বদরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ওমর।
আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানকে বিচারিক আদালতের দেয়া যাবজ্জীবন কারাদ- এবং ১৪ বছরের দ-িত আসামি আনিসুল ইসলামের দ- বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। তবে ১৪ বছরের দ-িত মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমানের দ- বহাল রেখে আদালত বলেন, দেখা যাচ্ছে, শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর পর থেকে তার ১৪ বছর দ- ভোগ করা হয়ে গেছে। তাকে বিচারিক আদালত ১৪ বছর দ-ের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদ-ের নির্দেশ দেয়। সুতরাং জেলকোড অনুসারে এ আসামি তার ওপরে প্রদত্ত দ- যদি ভোগ করে থাকেন, তবে তাকে মুক্তি দিতে (যদি অন্য কোন মামলা না থাকে) নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ১৪ বছরের অপর দ-িত আসামি সারোয়ার হোসেন মিয়াকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। যদি অন্য মামলা না থাকে, তাহলে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর এ আপীল শুনানি শুরু হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছিল। সে অনুসারে রায় ঘোষণা করা হয়।
মতামত দিন