• ২০২৪ অক্টোবর ২৩, বুধবার, ১৪৩১ কার্তিক ৭
  • সর্বশেষ আপডেট : ০২:১০ পূর্বাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

সাগরে আর কত মাছ ধ্বংস হলে ঘুম ভাঙবে !

  • প্রকাশিত ০৫:১০ পূর্বাহ্ন বুধবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
সাগরে আর কত মাছ ধ্বংস হলে ঘুম ভাঙবে !
টাইম বাংলা নিউজ
মতিউল ইসলাম মতি ( কক্সবাজার প্রতিনিধি) :

জেলা শহর কক্সবাজারের সমুদ্র তীরবর্তী মৎস্য আহরনের বিভিন্ন ঘাট ও পয়েন্টে কোস্টগার্ডের চাঁদাবাজি যেন কিছুতেই থামছে না।

সমুদ্রে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন এবং তা বেড়ে ওঠার জন্য গেলো ৬৫ দিন সাগরে মৎস্য আহরণের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বরাবরের মত। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার এই সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন দায়িত্বরত কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা ও সদস্যরা।

বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, কোস্টগার্ডের সদস্যদের বিভিন্ন অঙ্কে এককালীন ও মাসিক মাসোয়ারা দিলে সাগরে মাছ ধরতে কোন প্রকার ঝোট ঝামেলা পোহাতে হয় না অসাধু ট্রলার মালিক, আরতদার ও জেলেদের। মাসোয়ারা না দিলে মাছ ধরার টলার আটক করা হয়। 


কক্সবাজারের বিভিন্ন মৎস্য আহরণকারী ঘাট ও কক্সবাজারের সবচেয়ে বড় মৎস্য আহরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটের পার্শ্ববর্তী কোস্টগার্ডের সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে সাগরে মাছ ধরার অনুমতির এইসব অপকর্মের চিত্র দেখা গেছে।  


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেখানে নতুন নিযুক্ত সিসি কাসেম, আসার পর পর আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কক্সবাজার নুনিয়াছড়ার দায়িত্বে থাকা কোস্টগার্ড কর্মীরা।


অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তাদের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।


তাদের মাসোয়ারা দেওয়া মাছ ধরার ট্লার গুলো এখনো সাগরে মাছ ধরছে। এসব অপকর্ম এড়াতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার পর্যাপ্ত পরিমাণ চেষ্টা করছেন কোস্টগার্ড কর্মীরা।


যেহেতু ৬৫ দিন সাগরে মৎস্য আহরণ সম্পূর্ণরূপে নিষেধ, সেহেতু এই আদেশ অমান্যকারীরা অবশ্যই বড় ধরনের অপরাধী হিসেবে গণ্য। তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার অথবা শাস্তি প্রদান না করে, মৎস্য ব্যবসায় নিয়োজিত কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্র এবং অসহায় দিন মজুরদের ক্রয় করা মাছ আটক করে কোস্টগার্ডের কর্মীরা। এতে করে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী লোকজন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে, প্রতিনিয়তই নতুন নতুন লোক দেখানো গল্প তৈরি করে সেই দৃশ্য গুলো, ছবি এবং ভিডিও আকারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্তাদের নিকট পাঠানো হয়। 

যা সম্পূর্ণরূপে তাদের দায়িত্বের ব্যতিরেকে দৃশ্য।

অতিসত্বর তাদের এসব অনিয়ম অপকর্মের বিষয়গুলো  বিভাগীয় কর্মকর্তাদের আমলে নিয়ে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, কোস্ট গার্ড কর্মীদের  অপকর্ম আরো বৃদ্ধি পাবে। আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহলের লোকজন।


উল্লেখ্য বিষয়, গত ১৪ জুলাই নতুন বাহাছড়ার দিনমজুর মাছ বিক্রেতা জাবেদ এবং তার আরেক সহযোগীসহ খুচরা কিছু মাছ ক্রয় করেন।


ঠিক ওই সময় কোস্টগার্ড কর্মীরা তার  ক্রয়কৃত মাছগুলো আটক করে নিয়ে যায়।


স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত যারা সাগরে মাছ ধরছেন তাদের আটক না করে নির্দোষ ও অসহায় গরিব মানুষদের ওপর অন্যায় ভাবে অত্যাচার শুরু করে দিয়েছে কোস্টগার্ড কর্মীরা রীতিমতো


অথচ এই অসহায় মানুষদের মাছগুলো এনে সরকারি ভ্যাট সহ ৬৩, ২৫০ টাকা ধার্য করে নিলামে বিক্রি করা হয়ে থাকে।


জেলা মৎস্য অফিসার, তারাপদ চৌবহান এসব তথ্য নিশ্চিত করলেও কক্সবাজার কোস্ট গার্ড সিসি এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।


নিলামে মাছ বিক্রির টাকার বিষয়ে সাধারণ জনগণের কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ জনগণের প্রশ্ন, নিলামে বিক্রি করা মাছের টাকাগুলো প্রকৃতপক্ষে কোথায় যায়? 


সরকারি অর্থ কোষাগারে  এই টাকা যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে বহুবিধ প্রশ্ন।


সাগরের মাঝে এই নিষেধাজ্ঞার সময়টিকে ঘিরে, অসাধু কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা ও সদস্যদের কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে।

মাছ ধরার ট্রলার গুলো হাতেনাতে আটক করলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। মোটা অংকের অর্থ বিনিময়ের মাধ্যমে মাছ সাগরেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে আটককৃত ট্রলারগুলো।


এমতাবস্থায়, স্থানীয় সচেতন মহল সহ সকলের দাবি

এসব অসাধু ও দুর্নীতিবাজ অফিসার সহ এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কোস্টগার্ড সদস্য ও মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তিদ্বয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পর্যায়ে, সঠিকভাবে তদন্ত পূর্বক অতিসত্বর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে।

তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন সহ বিক্ষোব ও প্রতিবাদ আন্দোলন করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

তাই এসব অপরাধের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যারা সম্পৃক্ত আছেন তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন কক্সবাজারের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ সচেতন মহল।

সর্বশেষ