যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ‘লন্ডন ক্লিনিক’-এ ভর্তি করা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। লিভার সিরোসিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতে থাকা ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আপাতত এখানেই চিকিৎসা নেবেন।
লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাতে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছেন, প্রফেসর প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন খালেদা জিয়া।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে স্থানীয় সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান বিএনপি প্রধান। সেখানে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। দীর্ঘ সাত বছর পর মাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন তারেক রহমান। এসময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
গাড়ি চালিয়ে মাকে হাসপাতালে নিলেন তারেক রহমান উড়োজাহাজ থেকে নামার পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হযরত আলী খান। এসময় যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে ক্লিনিকে নিয়ে যান তারেক রহমান।তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়। পরে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হসপিটালেই লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেয়।
সেই চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডনে গেলেন। লন্ডন ক্লিনিক-এর চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলে তিনি যেতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রেও।এর আগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। কাতারের দোহা হয়ে লন্ডন পৌঁছান তিনি।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্য লন্ডনে গেছেন। তারা হলেন—অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফএম সিদ্দিক, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে গেছেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান। দলীয় নেতাদের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর তার সফরসঙ্গী হয়েছেন।
মতামত দিন