• ২০২৪ নভেম্বর ২১, বৃহস্পতিবার, ১৪৩১ অগ্রহায়ণ ৭
  • সর্বশেষ আপডেট : ০৯:১১ অপরাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করে বিশ্বে উন্নতি ও প্রেমের পথ প্রদর্শন করবে’

  • প্রকাশিত ০৯:১১ অপরাহ্ন বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করে বিশ্বে উন্নতি ও প্রেমের পথ প্রদর্শন করবে’
ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে শিক্ষার প্রসারে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে ওই এলাকার মাধ্যমিক স্কুলের আধুনিকায়নের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভারতে শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী মাতুয়া সম্প্রদায়ের যারা রয়েছেন, কাশিয়ানীর ওড়াকান্দি মন্দিরে তাদের তীর্থযাত্রা সহজ করতে ভারত সরকার প্রয়াস চালিয়ে যাবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করে বিশ্বে উন্নতি ও প্রেমের পথ প্রদর্শন করবে বলেও আশাবাদ জানান তিনি।

আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কাশিয়ানীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দিরে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোদি বলেন, আজ প্রতিটি ভারতবাসীর সৌভাগ্য যে তারা এখানে বাংলাদেশে শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের যে প্রচেষ্টা, তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। ওড়াকান্দিতে শিক্ষা প্রসারের প্রচেষ্টায় ভারতের জনগণ যুক্ত হবেন। ওড়াকান্দিতে ভারত সরকার মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলোর আধুনিকায়ন করবে। এসব স্কুলে নতুন ও আধুনিক সুবিধা দেবে। একইসঙ্গে ভারত সরকার এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও স্থাপন করবে। এটি ভারতের কোটি মানুষের পক্ষ থেকে হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই কাজে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।

ওড়াকান্দি মন্দিরে ভারতের নাগরিকদের আসার পথ সহজ করার জন্য ভারত সরকার কাজ করবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের আমাদের ভাই-বোনেরা হরিঁচাদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর পূণ্যলগ্নে প্রতিবছর বারুনি স্নান পালন করে থাকেন। এ জন্য ভারত থেকে প্রচুর পূণ্যার্থী ওড়াকান্দিতে আসেন। ভারতের মাতুয়া সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেদের জন্য এই তীর্থযাত্রা যেন আরও সহজ হয়, সে জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি প্রয়াস নেওয়া হবে। ঠাকুরবাড়ির গৌরবময় ইতিহাসকে তুলে ধরতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজান ও বিভিন্ন কাজের জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সবার উন্নয়নের মন্ত্র নিয়ে ভারত এগিয়ে চলেছে। ভারতের এই যাত্রায় বাংলাদেশ সহযাত্রী। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়ন ও পরিবর্তনের এক শক্তিশালী উদাহরণ। বাংলাদেশের সেই প্রচেষ্টাতেও ভারত আপনাদের সহযাত্রী।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমার বিশ্বাস— হরিচাঁদ ঠাকুরের আশীর্বাদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রেরণায় বাংলাদেশ ও ভারত— এই দুই দেশই একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে নিজেদের লক্ষ্য পূরণ করব। দুই দেশ উন্নতি ও প্রেমের বার্তা পৌঁছাতে বিশ্বের সামনে পথপ্রদর্শন করতে থাকবে। এই শুভকামনার সঙ্গে আপনাদের সবাইকে আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই।

হরিচাঁদ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য ওড়াকান্দি মন্দিরে আসার মাধ্যমে দীর্ঘ দিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে বলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, হরিচাঁদ ঠাকুরের কৃপায় আমার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ির এই পূণ্যভূমি প্রণাম করার সৌভাগ্য হলো মাতুয়া সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ এখানে এসে যেমনটি অনুভব করেন, আমি আজ ঠিক তেমনটিই অনুভব করছি। এই দিনের এই পবিত্র মুহূর্তের প্রতীক্ষা আমার বহু বছর ধরে ছিল।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বাংলাদেশ এসেছিলাম, তখনই এখানে আসার ইচ্ছা পোষণ করেছি। আজ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের ১৩০ কোটি জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এখানে আসার আগে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, ভিশন এবং বাংলাদেশের মানুষের ওপর তার আস্থা ও বিশ্বাস উদাহরণস্বরূপ। আজ যেভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার দুই দেশের স্বাভাবিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে, সাংস্কৃতিকভাবে ঠাকুরবাড়ি ও হরিচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা বহু বছর ধরে একই কাজ করে আসছে।

তিনি বলেন, এই স্থান বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থক্ষেত্র। আমাদের সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, মনের সঙ্গে মনের সম্পর্ক। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই নিজেদের বিকাশ ও প্রগতি শুধু নয়, সারাবিশ্বের প্রগতি দেখতে চায়। দুই দেশই অস্থিরতা, সন্ত্রাস ও অশান্তির পরিবর্তে স্থিতিশীলতা, প্রেম ও শান্তি চায়। এই মূল্যবোধ, এই শিক্ষা হরিচাঁদ ঠাকুর আমাদের দিয়েছিলেন। আজ সারাবিশ্ব যে শূল্যবোধের কথা বলছে, মানবতার ভবিষ্যতের কথা বলছে, সেই মূল্যবোধের জন্যই হরিচাঁদ ঠাকুর নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

সর্বশেষ