অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে হিটস্ট্রোকে আফজাল মৃধা ও সজীব মুন্সী নামে বাংলাদেশি দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জে। লিবিয়া পুলিশ আফজালের লাশ উদ্ধার করে ত্রিপোলির একটি হাসপাতালের মর্গে রেখেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরেছেন।আফজাল গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের ধোপাদী গ্রামের কৃষক একরাম মৃধার ছেলে। সজীব মুন্সী একই উপজেলার রাগদী ইউনিয়নের ফজলু মুন্সীর ছেলে। এ ঘটনায় তাদের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এ ঘটনায় জড়িত দালাল ও তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজনরা।আফজালের ভাই আজিজুল মৃধা বলেন, মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের মানব পাচার চক্রের সদস্য আক্কাছ ফকিরের ছেলে ইতালি প্রবাসী ইলিয়াস ফকির ও তার ভাই দুলাল ফকির ইতালি নেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে দু'দফায় প্রায় ছয় লাখ টাকা নেয়। গত মে মাসে দুলাল ফকিরের সহযোগিতায় লিবিয়ায় যান আফজাল। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর আফজাল নৌকায় ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়া পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ৩২ দিন জেল খেটে বের হন আফজাল। এরপর তিনি ফের ওই দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। ১৯ জুলাই লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় দালালরা তাকে ইতালির উদ্দেশে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে বাধ্য করে। মাঝপথে ট্রলার নষ্ট হলে প্রচণ্ড রোদে হিটস্ট্রোকে মারা যন আফজালসহ আরও পাঁচজন।আফজালের বাবা একরাম মৃধা ও মা মিনারা বেগম ছেলের লাশ দেশে এনে তাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।তপারকান্দি গ্রামের সজীব মুন্সীর শোকার্ত মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে গত ১৮ জুলাই শেষবার কথা হয়েছে। দালালরা তাকে জোর করে নৌকায় তুলে দিয়ে হত্যা করেছে। তাকে ইতালি পৌঁছে দিতে রাজৈর উপজেলার সত্যবর্তী গ্রামের দালাল শাহিন সরদার আমার কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা নিয়েছে।দালাল চক্রের সদস্য ইলিয়াস ফকির, দুলাল ফকির ও শাহিদ সরদার ইতালি ও লিবিয়ায় থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।মুকসুদপুর থানার ওসি মো. আবু বকর মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতামত দিন