ঝালকাঠির রাজাপুরে নও মুসলিম আমেনা আক্তার (২৬) এর উপরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী অপুর্ব কুমার পাল ও তার পরকিয়া প্রেমিকা জাহানুর বেগম সহ ৫/৬ জন মিলে এ হামলা চালায় বলে জানায় আমেনা আক্তার।
গত ৩ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যা সারে ৭ টার দিকে উপজেলার শুক্তাগর ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদরে আসার পথে শুক্তাগর গ্রামের সুইচ গেট সংলগ্ন ফকির বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় মাথায় ধাড়ালো ছুড়ির আঘাত সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত নিয়ে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নও মুসলিম আমেনা আক্তার।
আহত আমেনা আক্তার জানায়, ৩ বছর আগে স্বামী অপুর্ব কুমার পাল ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলে আমিও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জেনে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করি। ধর্ম পরিবর্তনের পরে স্বামী আবদুল্লাহ আল মইন আর আমি শেফালি দাস থেকে আমেনা আক্তার নাম রাখি। কিন্তু তখন আমারা দেশের আইন অনুযায়ী কোর্টে এভিডেভিড করিনি। এর পর থেকেই আমার উপরে নির্যাতন শুরু হয় আমার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু আমিতো ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার কারনে আমার বাবার বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পরে জানতে পারি আমার স্বামী ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নয় তিনি ৮৬ নং উত্তর শুক্তাগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জাহানুর বেগমের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছে। আমি সব জানতে পেরে তাকে এসব ছাড়ার জন্য চাপ দিলে আমার উপরে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে দিতে বলে। এর আগেও তার ব্যবসার জন্য অনেক টাকা তাকে নিয়ে দেই ভাইয়ের কাছ থেকে। এখন ধর্ম পরিবর্তনের কারনে আমার বাবার পরিবার আমাকে মেনে না নেয়ায় টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে আমাকে ঢাকায় রেখে ব্যবসার সব কিছু বিক্রি করে আমাদের ৩ বছরের ছেলেকে আমার কাছে রেখে ৬ বছরের ছেলেকে নিয়ে সে এলাকায় চলে আসে। পরে আমি লোকজনের সহায়তায় এলাকায় এসে জানতে পারি ওই মহিলাকে নিয়ে ঝালকাঠিতে ভাড়া বাসায় থাকে। এদিকে গত ৯ নভেম্বর আমি ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে এভিডেভিড করি। এখন আমি সব হাড়িয়ে অবিভাবকহীন হয়ে মানুষের দুয়ারে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি। এ বিষয়ে আমি কয়েকজন মেম্বার এবং সমাজের মানুষকে নিয়ে মীমাংসার জন্য বসলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালায়।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা জাহানুর বেগম বলেন, আমি ঘটনার সময় বরিশালে আমার ছেলের বাসায় ছিলাম। অপুর্ব কুমার পাল আমার ছাত্র ছিল, এছাড়া কিছুইনা। আমাকে সমাজে ছোট করার জন্য একটি কুচক্রী মহল এমনটা রটাচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অপুর্ব কুমার পাল বলেন, তার সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলায় সে আমার ঘর থেকে টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে ২ মাস পুর্বে পালিয়ে যায়। আমি এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করলে তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে হয়রানি করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মতামত দিন