মোঃ আব্দুল কাদের, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম সদরের বেলগাছা ইউনিয়ন থেকে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক কিশোরকে (১৬) আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) ভোরে ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বেলগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম আর সাঈদ ও বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রাতে গীতা সংঘ অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলে স্থানীয়দের বরাতে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত শিশুর নাম সিমিত চন্দ্র (১২)। সে ওই গ্রামের মানিক চন্দ্র ড্রাইভারের ছেলে। অভিযুক্ত কিশোর (১৬) একই গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র দর্জির ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরের বড় ভাই ও বাবাকে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
চেয়ারম্যান লিটন মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের গীতা সংঘ অনুষ্ঠান দেখতে যায় সিমিত ও তার বড় ভাই। সিমিতকে অনুষ্ঠানস্থলে রেখে বাড়িতে ফেরে তার বড় ভাই। পরে অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে সিমিতের সাথে অভিযুক্ত কিশোরের কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় সিমিতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ওই কিশোর। পরে তাদের একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির পেছনের গর্তে সিমিতের মরদেহ পুতে রাখে। অনুষ্ঠান শেষে সিমিত বাড়িতে না ফিরলে স্বজনরা তাকে খুঁজতে বের হয়। তারা এ বিষয়ে অভিযুক্ত কিশোরকে জিজ্ঞাসা করলে সে অসংলগ্ন আচরণ করে। পরে তার বাবা প্রদীপ চন্দ্র তাদের পরিত্যাক্ত বাড়ির পেছনের একটি গর্তে সিমিতের মরদেহ দেখিয়ে দেন। বুধবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের বরাতে চেয়ারম্যান বলেন, সম্ভবত সিমিতকে হত্যার পর নিরুপায় হয়ে ওই কিশোর তার বাবাকে ঘটনা বলেছিল। পরে বাবা ছেলে মিলে শিশুটির মরদেহ গর্তে পুতে রাখার চেষ্টা করে থাকতে পারে। তবে পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবে।
আটক কিশোরের 'স্বীকারোক্তির' বরাতে সদর থানার ওসি এম আর সাঈদ বলেন, অভিযুক্ত কিশোরের সাথে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। এ নিয়ে সিমিতসহ অনেকেই ওই কিশোরকে খোঁচা দিত। গত রাতে সিমিত ওই কিশোরকে এ নিয়ে আবারও খোঁচা দিলে সে সিমিতের গলা বগলদাবা করে ধরে। এতে শ্বাসরোধ হয়ে সিমিত মারা যায়।
ওসি বলেন, অভিযুক্ত কিশোর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা স্বীকার করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযুক্তের বাবা ও বড় ভাইকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
মতামত দিন