• ২০২৫ Jun ১০, মঙ্গলবার, ১৪৩২ জ্যৈষ্ঠ ২৬
  • সর্বশেষ আপডেট : ১১:০৬ অপরাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

নিজ জন্মভূমিতে ফিরার আশায় বার বার প্রতারণার শিকার রোহিঙ্গারা

  • প্রকাশিত ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন মঙ্গলবার, Jun ১০, ২০২৫
নিজ জন্মভূমিতে ফিরার আশায়  বার বার প্রতারণার শিকার রোহিঙ্গারা
File
মতিউল ইসলাম (মতি)

নিজ জন্মভূমিতে ফিরার আশায়  বার বার প্রতারণার শিকার রোহিঙ্গারা


মতিউল ইসলাম কক্সবাজার 


কেউ কথা রাখেনি?নিজ জন্মভূমিতে ফিরার আশায়,পথ চেয়ে প্রতিনিয়ত কান্না করছে ১৪ লাখ রোহিঙ্গা।নিজ দেশের কথা বলার সাথে সাথে অজরে কান্না করছেন,লক্ষ লক্ষ মুসলিম পরিবারের রোহিঙ্গা সদস্যরা।

অথচ, নিজ দেশে তাদের ছিল অনেক সহায় সম্পদ বাংলাদেশে আসার পর মানাবেত জীবন যাপন করছেন রোহিঙ্গারা। স্বদেশে তাদের ছিল গরু মহিষ হাল চাষ ও মাছের গের এবং তাদের সুন্দর সংসার। একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হ'য়ে প্রাণ বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গারা প্রবেশ করে বাংলাদেশে। রোহিঙ্গাদের বারবার নিজ দেশে ফেরার কথা বলা হলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি কোন কথা। যা, শিয়াল মামার পাঠশালার গল্প কেও হার মানানো হয়েছে। এমন দৃশ্য দেখা গেছে, 

কক্সবাজার উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে। 


 রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে,টাইম বাংলা নিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারা প্রতিদিনের মতো প্রতারণার শিকার।

তাদের সাথে প্রতারণা করছে তাদের রোহিঙ্গা নেতারা, তাদের কার্যক্রম সন্দেহজনক। 


রোহিঙ্গারা আরো জানান, তাদের নেতার অভাব নেই। কিন্তু এই অবহেলিত জাতীর নিষ্ঠাবান নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই। তারা যাদের উপর আশা করে নেতা হিসেবে মানতে চায় এবং মিয়ানমারের নির্যাতন থেকে বাঁচতে চাই।

তারা নিজেরা  রোহিঙ্গা জাতীর সাথে চরম প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে মিয়ানমারের এজেন্ট বা দালাল রূপে বাস্তব জীবনে দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। এসব নেতারা রোহিঙ্গাদের সামনে নির্যাতন থেকে বাঁচানোর কথা বললেও পিছনে তারা এক একটি অর্গানাইজেশন (সংগঠনের) নামে টাকা উত্তোলন করে 

 নিজেরাই উন্নত দেশে ব্যবসা বাণিজ্য করে।নিজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। 


অভিযোগ আছে এসব লোভী নেতারা বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে আদায় করে লক্ষ্য লক্ষ্য ডলার। আর  এসব ডলারের  ক্ষুদ্র অংশও রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছায় না, বলে রোহিঙ্গাদের অভিযোগ। নামে বেনামে অনেক অর্গানাইজেশনের (সংগঠনের) নেতারাই ভাগ বাটোয়ারা করে দেশে বিদেশে বিলাসি জীবন কাটাচ্ছে বলেও এসব নেতাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অভিযোগ। মাঝে মধ্যে  মিয়ানমারে অথবা বাংলাদেশে বসাবাসরত সাধারণ রোহিঙ্গারাদের চোখে দূলা দিয়ে বৈঠক - সেমিনারের নামে আইওয়াশ করে সংগ্রহ করে ছবি ভিডিও। আর এগুলো  কথিত রোহিঙ্গাদের নেতাদের জন্য বড় আশির্বাদ হয়ে আসে। এতে মোটামুটি নিখুঁতভাবে চলে তাদের রমরমা জাতি বিক্রির ব্যবসা। তাদের এইসব সংগঠনের কার্যক্রমের দ্বারা  রোহিঙ্গাদের ভাগ্য  কখনো পরিবর্তন হবে না বলে ধারণা করেন রোহিঙ্গারা।


আরো জানা গেছে, এসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোটি কোটি অর্থ উপার্জন করছে,

(ARU) আরকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন সংগঠন। 

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ ওয়াকার উদ্দিন তার আপন ভাই রেজা উদ্দিন,আয়ুব, নুর ইসলাম, তুংকিন, আবু সিদ্দিক আরমান, ক্যাম্পে বসাবাসরত দিল মোহাম্মদ সহ আরোও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এক একটি অর্গানাইজেশন গঠন করে নেতা দাবী করা এই লোকজনের  প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা। 

তারা বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের এজেন্ট বাস্তবায়ন করলেও বর্তমানে আবার আরাকান আর্মির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে দাবি রোহিঙ্গাদের। বালুখালি ১১ নাম্বার ক্যাম্পে বসাবাস করা শামসুল আলম এবং  মাহবুব আলম, জানান - রোহিঙ্গাদের অধিকারের পক্ষে, মিয়ানমারে তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব আদায়ে বা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসের পক্ষে কথা বললে তাদের মেরে পেলে মিয়ানমারের এজেন্টরা, এইসব এজেন্ট রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে গড়ে উঠা। তারা কখনো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে কাজ করেনা, মিয়ানমার থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা আদায়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে তামাশা করে । এক সময় মিয়ানমার সরকারের এজেন্ট বাস্তবায়ন করলেও বর্তমানে তারা রুপ পরিবর্তন করে  আরাকান আর্মির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে - সংবাদ কর্মীরা তাদের নাম জানতে চাইলে,সে বলেন ওয়াকার উদ্দিন নামে একজন ছিল সে মারা গেছে, বর্তমানে তার ভাই রেজা উদ্দিন ও আবু সিদ্দিক আরমান  সহ আরোও কয়েকজন আছে বলে জানান।


অন্যদিকে ১৬ নাম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসাবাসরত - আলী হোসেন জানান,রেজা উদ্দিন ২০১৩ সালে মিয়ানমার সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে তার কারণে মিয়ানমারের সরকারের হাতে অনেক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। সে বর্তমানে আরাকান আর্মির একটি টিমের সাথে যোগাযোগ করতে ৮ই মে ২০২৫ ইং ঢাকা এসেছে, ১০ মে পোগনে ক্যাম্প পরিদর্শনে ৯ নাম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছে, তার পক্ষে ক্যাম্পে কাজ করা কয়েকজন যুবক আগে থেকে রোহিঙ্গাদের ঠিক করে রেখেছে। হঠাৎ রেজা উদ্দিন এসে ক্যাম্প হাটাচলার কিছু ছবি ভিডিও নিয়ে দ্রুত চলে যায়। সে আরোও জানান রেজা উদ্দিনের পক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দ্বায়িত্ব পালন করা সাদেক (২৬) আগে থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করে,তাদের সংঘটনের  নাম দিয়েছে "আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন " এই নামে ব্যানার চাপিয়ে উখিয়ার কোট বাজারে ৭১ কনভেনশন হল নামে একটি ক্লাবে সেমিনার করে, সেই সেমিনারে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা কে উপস্থিত করার সকল দ্বায়িত্ব পালন করে সাদেকসহ তার একটি টিম। 

রেজা উদ্দিন নামে আমেরিকা থেকে আসা এই ব্যক্তির লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে সাংবাদিকের একটি টিম উখিয়ার কোটবাজারে ৭১ কনভেনশন হলে  পৌঁছায়। কনভেনশন হলে সাংবাদিকরা পৌঁছালে রেজা উদ্দিন সাংবাদিক প্রবেশের আগেই দ্রুত গতিতে চলে যায়। তখন উপস্থিতিত ছিল রেজা উদ্দিনের দ্বায়িত্ব পালন করা  সাদেক সহ ২০ জনের, তাদের কাছে ভোরের কথার 


 প্রতিবেদক কিছু তথ্য জানতে চাইলে তারা কোন ধরনের সত উত্তর দিতে পারেনি। এ সময় সাদেকের সাথে থাকা এক রোহিঙ্গা যুবক জানান স্যারের অনুমতি ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারি না।


এবিষয়ে কনভেনশন হলের দ্বায়িত্বে থাকা দুইজনের সাথে কথা বললে তারা জানান এনজিওর বৈঠক বলে হল ভাড়া নিয়ে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা যুবক এসে সেমিনার করে চলে যায়, 

কনভেনশন হলের গেইটের কুলিং কর্নার ব্যবসায়ি জানান তার দোকান থেকে বিভিন্ন নাস্তা নিয়েছিল কিন্তু সাংবাদিক দেখে তার নাস্তার টাকা পরিশোধ না করে দ্রুত চলে যায়। 


আমেরিকা থেকে আসা রোহিঙ্গা নেতা দাবী করা রেজা উদ্দিনের কাছে একাদিকবার কল করেও রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রেজা উদ্দিনের সংঘটনের দ্বায়িত্ব পালন করা সাদেকের সাংবাদিক বিরোধী কথা বলার রেকর্ড ফাঁস হয়। 


রেজা উদ্দিন নামে এই লোকের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আরআরআরসির কোন প্রত্যায়ন বা অনুমতি ছিল কি না জানতে নয় নাম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক্সেকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সি আই সি মুহাম্মদ আরাফাতুল আলমের কাছে মোটোফোনে কল দিলে তিনি জানান এবিষয়ে তিনি  কিছুই জানেন না, এমন অনুমতিও তিনি দেয়নি, তিনি আরোও জানান এমন কোন টিম ক্যাম্প পরিদর্শনে আসলে সিআইসি কে অবগত করতে হয়, ইনফরমেশন টি দেওয়ার জন্য তিনি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান, এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয় টি অবগত করবেন বলও জানান। 


ক্যাম্পে বসাবাসরত সাধারণ রোহিঙ্গারা জানান রেজ উদ্দিন একসময় মিয়ানমারের সরকারের এজেন্ট ছিল, সে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর কোন লাভবান কাজ করার নজির নেই, বিভিন্ন সময় কৌশলে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের ছবি ভিডিও সংগ্রহ করে ভিন্ন রাষ্ট্র এবং আরাকান আর্মির কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে বলে জানান। 

আরেক রোহিঙ্গা জানান বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে সীমান্তে করিডর চালো করতে আরাকান আর্মি জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এর মধ্যে গোপনে আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে রেজা উদ্দিন বাংলাদেশে এসেছে বলে জানান এই রোহিঙ্গা। 

 

রোহিঙ্গারা আরোও জানান প্রত্যাবানের পক্ষে কাজ করা " এ আর এস পি এইচ" সংঘটনের রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ সহ অনেক নেতা কে হত্যা করেছে মিয়ানমার, এইসব হত্যার পিছনে এজেন্ট বাস্তবায়ন করেছে রেজা উদ্দিন দের মত অনেকই। তাই বিদেশে জন্ম দেওয়া এইসব রোহিঙ্গা নেতাদের তারা বিশ্বাস করে না বলেও জানান। রোহিঙ্গারা চাই সঠিক নেতা ও নেতৃত্ব যাতে করে তারা টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে।


এইসব রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী জনবসতি বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফে ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও নানা নাটক তালবাহানার মধ্য দিয়ে কোন রোহিঙ্গা কে ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার। এরই মধ্যে মিয়ানমার সরকারের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় আরেক বিদ্রোহী সংঘটন আরাকান আর্মি তথা মং বাকি, সূত্র মতে এইসব আরাকান আর্মিদের লুনটিন বাহিনী হিসেবে রোহিঙ্গাদের উপর নিপিড়ন নির্যাতন চালাতে  ব্যবহার করত মিয়ানমার সরকার। আরাকান আর্মি নামে এই রাখাইন জনগোষ্ঠী নেপাল,ভারত, আসাম, ত্রিপুরা, বাংলাদেশের কাঠগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি,বান্দরবান থেকে মিয়ানমারের আরাকানে গিয়ে মিয়ানমার সরকারের আশ্রয়ে জনবসতি গড়ে তুলে। রোহিঙ্গারা নির্যাতনের মূখে আরাকান ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার পর আরাকানের অধিকাংশ জায়গা খালি হলে এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আরাকান স্টেট কে রাখাইন স্টেট হিসেবে গড়ে তুলতে - মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সাথে তুমুলযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে আরাকান আর্মি এইসব যুদ্ধে ২০২৪ সালের শেষের দিলে ৯০% জায়গা দখলে নেয় আরাকান আর্মি নামের এই বিদ্রোহীরা,এতে আরোও বিশাল আকারে বাধ্যগ্রস্ত হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসান। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বসাবাসরত অধিকাংশ জায়গায়ই এখন আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণে ।

এইসব পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির এজেন্ট বাস্তবায়নে লিপ্ত হয়ে কাজ করতেছে রোহিঙ্গা কয়েক নেতা। তাদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের অভিযোগের তীর আমেরিকার মিলওয়াকিতে বসাবাসরত রেজা উদ্দিন ও সৌদিতে বসাবাসরত আবু সিদ্দিক আরমান এর উপর  ইতি মধ্যে আবু সিদ্দিক আরমান কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্পের পাশে বসতি গড়ে তুলেছে।

সর্বশেষ