কক্সবাজার রামু মাদ্রাসাছাত্রীকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণ: থানায় এজেহার!
মতিউল ইসলাম কক্সবাজার প্রতিনিধ :
বধু সেজে শশুর বাড়িতে আর যাওয়া হলো না, বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন, চলছিল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। রাত পেরোলেই বউ সেজে শশুর বাড়ি যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর কনে। অথচ একটিমাত্র ভিডিও’র কারণে ভেঙে তছনছ হয়ে গেল ফাহমিদা জান্নাত মাহিমার স্বপ্ন।
এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চেইন্দা ছড়ারকুল গ্রামে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রী ফাহমিদা বাদী হয়ে রামু থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও দায়ের করা লিখিত এজাহার সূত্রে জানা যায়, রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চেইন্দা ছড়ারকুল এলাকার সৌদি প্রবাসী ফজল করিমে মেয়ে ফাহমিদা জান্নাত মাহিমা ফকিরা মুরা মাদ্রাসায় পড়াকালে তাকে প্রতিনিয়ত ইভটিজিং ও উত্যক্ত করত রিয়াদ নামে এক বখাটে। সে একই ইউনিয়নের আছমারঘোনা, খরাতি ঘোনা এলাকার মৃত মোস্তফার বখাটে পুত্র।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে রিয়াদের পরিবারকে বারবার নালিশ জানালেও বখাটে রিয়াদ বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। বখাটে রিয়াদের ধারাবাহিক উৎপাতে এক পর্যায়ে ফাহমিদাকে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন তার পরিবার।
সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী এলাকার জনৈক শহিদুল আলম এর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ ঠিক করে তার পরিবার। এবং যথারীতি কাবিন নামাও সম্পন্ন হয়। গেলো ১১ জুলাই ফাহমিদা জান্নাত মাহিমাকে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার দিনক্ষণ চুড়ান্ত করে বর শহিদুল আলম ও তার বাড়ীর লোকজন ।
এমতাবস্থায় গত ০১ জুলাই দুপুরে ফাহমিদা কম্পিউটার ট্রেনিং এর ক্লাস শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ছাদের পাড়া এলাকায় নির্জন স্থানে পৌছিলে আগে থেকে উৎপাতে থাকা বখাটে মোহাম্মদ রিয়াদ তার সহযোগীদের নিয়ে ফাহমিদাকে জোর পূর্বক সিএনজি টেক্সী যোগে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে কক্সবাজার শহরের অজ্ঞাতনামা একটি কক্ষে আটকে রেখে জোর পূর্বক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে এবং তার ব্যবহৃরিত মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
এর পরে একই দিন সন্ধ্যা অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় বনতলা রাস্তার মাথায় ফাহমিদাকে নামিয়ে দিয়ে ধর্ষক রিয়াদ সটকে পড়ে। বিষয়টি ভুক্তভোগী ছাত্রী তার পরিবারকে জানালেও তারা বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ভয়ে বিষয়টি চেপে রাখে।
এতো কিছুর পরও বিবাহের দুই দিন পূর্বে অর্থাৎ গত ০৯ জুলাই দূর্ধর্ষ ছিনতাইকারী ধর্ষক রিয়াদ তার মোবাইলে ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ভুক্তভোগীর হবু বর জনৈক শহিদুল আলম এর নিকট পাঠলে বিয়ের আগের রাত মেহেদী অনুষ্ঠান চলাকালে বরপক্ষ বিয়ে ভেঙ্গে দেন।
এই ঘটনায় চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মেয়েটি ও তার পরিবার। বিয়ের যাবতীয় ব্যয় ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ফাহমিদার পরিবার। এই ঘটনা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে উক্ত ধর্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন ফাহমিদার পরিবার।
মতামত দিন