এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সমুদ্রে ভেসে যাওয়া চবির শিক্ষার্থী অরিত্র কে পাওয়া যায়নি !
মতিউল ইসলাম (কক্সবাজার)
আনন্দ ভ্রমণ যেন-হয়ে গেল তিন বন্ধুর মৃত্যুর স্মৃতি,ইতি হাসের প্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীদের সাগরে ভেসে যাওয়ার ইতিহাস।
প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে সোমবার পাঁচ বন্ধু মিলে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। তারা প্রত্যেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তাদের একজন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ মিয়া জানান,ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তারা হিমছড়ি জাদুঘর সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতে যান। সেখানেই ঘটে দুর্ঘটনা।
রিয়াদ মিয়া বলেন, “ছবি তোলার সময় বৃষ্টি শুরু হলে আমরা দুইজন দৌড়ে ছাতার নিচে চলে আসলেও বাকি তিনজন সাগরে থেকে যায়। বারবার তাদের ডাকার পরও তারা ‘আসছে, আসছে’ বলতে থাকে।”
“এমনকি মাছ ধরতে থাকা মাঝিরাও তাদের উঠে যেতে বলেছে। একপর্যায়ে তারা পানিতে তলিয়ে যায়। কিছু সময় পর সাবাবের একজনরে লাশ তীরে ভেসে আসে। দুইদিন পর আসিফ হাসান নামে আর এক জনের লাশের সন্ধ্যান মিলেছে, অন্যদিকে অরিত্র নামে ঐ শিক্ষার্থীকে, আর পাওয়া যায়নি” – বলেন রিয়াদ।
কক্সবাজারে সাগরে নেমে নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার হলেও এক সপ্তাহ পারহয়ে গেলেও এখনো একজন কে পাওয়া যাচ্ছেনা।
কক্সবাজার হিমছড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক সোমনাথ বসু জানান, মৃত: ব্যক্তি এম সাদমান রহমান সাবাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঢাকার মিরপুরে। সাবাবের আর এক নিখোঁজ বন্ধু হলেন- অরিত্র হাসান।
“আমরা সৈকতে আছি, তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে” বলেন সোমনাথ।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম বলেন, সাগর এতো উত্তাল সেখানে ডুবুরি নামাও কষ্টের হয়ে গেছে। স্রোত অনেক বেশি। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
সী-সেইফ লাইফ গার্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মী মো. ওসমান জানান, তারা যখন সমুদ্রে নামেন তখন উত্তাল জোয়ার ছিলো। দুপুর ১২ টায় ভাটা হওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের সাথে লাইফ গার্ডের কর্মীরাও চেষ্টা করছে উদ্ধারের।অরিত্রের পিতা, মাতা- বলেন আমরা আমার সন্তানকে ছাড়া বাসায় ফিরবো না,যে অবস্থাই হোক আমার সন্তানের সন্ধান চাই। সে আশায় বুক বেঁধে সাগরের তীরে তাকিয়ে আছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের পিতা, মাতা। এখনো তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা খুঁজি করছেন তাদের সন্তানকে যেন যেকোনো অবস্থায় ফিরে পাই। ভালো থাকুক, এই শোকাহত তিন পরিবারের সদস্যরা,মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের ধৈর্যধারণ করার তৌফিক দান করুক আমীন।
মতামত দিন