কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বন দস্যুতার বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধ
মতিউল ইসলাম
কক্সবাজার রামু উপজেলার ধোয়াপালং রেঞ্জের খুনিয়াপালং ইউনিয়নের বসুরঘোনা এলাকার দ্বিতীয় আবর্তের ৬০.০ হেক্টর সামাজিক বনায়নে দীর্ঘদিন ধরে ২৫ টি পানের বরজ চাষাবাদ করে আসছে। সম্প্রতি উক্ত এলাকার নতুন করে ৫টি স্থানে পানের বরজ তৈরির অপচেষ্টা হিসেবে জঙ্গল কর্তন এবং ২ একরের জায়গায় ঢেঁড়সসহ মৌসুমি সবজি চাষাবাদ করে জবর দখলের চেষ্টা করেছিল বনদস্যু ও তাদের দোসররা। বিগত সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বনের জমিতে অনেকটা বনবিভাগের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করে রেখেছিল পলাতক দস্যুবাহিনীর সর্দার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
১৭/১২/২০২৫ খ্রিঃ তারিখে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে উক্ত বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক, সদর এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রামু; সহকারী কমিশনার (ভূমি), রামু এর উপস্থিতিতে অত্র বন বিভাগের বিভিন্ন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বনকর্মী এবং পুলিশ ও সিপিজি সদস্যদের সহযোগীতায় উল্লেখিত বনভূমিতে ৫.০০ ঘন্টা ব্যাপী উচ্ছেদ ও জবরদখল মুক্ত করার অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উক্ত অভিযানে ২৫ টি পানের বরজ, দুই হাজারেরও অধিক সুপারির চারা এবং সবজি ক্ষেত অপসারণ করে ৬০.০ হেক্টর বনভূমি জবর দখল মুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য যে বর্ণিত স্থানটি বাংলাদেশের স্থলভাগের বৃহত্তর স্থন্যপায়ী প্রাণী এশিয়ান হাতির আবাসস্থল ও বিচরণ ক্ষেত্র। এখানে বিভিন্ন দলে প্রায় ২০-২৫ টি হাতির চলাফেরা ও খাদ্য আহরণের নিরাপদ আবাসস্থল। হাতির নিরাপদ আবাসস্থল ও প্রজননক্ষেত্র হিসেবে সুদীর্ঘ ব্যবহারের কারনে এখানে প্রতিবছর হাতির বাচ্চা প্রসব সহ সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
বনভূমি দস্যুরা ক্ষমতার জোরে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক বনভূমিকে সবজি চাষের ক্ষেত্র, সুপারিবাগান ও পানের বরজসহ নানান রুপান্তরের মাধ্যমে এর প্রাকৃতির বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করেছে। আজকের অভিযানের সেই জবরদখল উচ্ছেদ করা সহ পুনরায় স্থান উপযোগী বনায়নের মাধ্যমে এই বনভূমিতে হাতির বিচরন ও নিরাপদ প্রজনন ক্ষেত্রের সার্বিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা হবে।
মতামত দিন