৩০.০৯.২০২১
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের খিতাব খা গ্রামে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের নরেশ চন্দ্র (৫৫) এর বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর ১১ঃ০০ ঘটিকায় ধর্ষিতার পরিবারের সকল সদস্য ইউনিয়ন পরিষদে করোনার টিকা নিতে যান। সুযোগ বুঝে পঞ্চাশ উর্ধ্ব নরেশ চন্দ্র তার লালসা মিটানোর জন্য মোকছেদুলের বাড়িতে প্রবেশ করেন। ফাকা বাড়ি পেয়ে তৃতীয় শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। মেয়েটির আত্মচিৎকারে পাশের বাড়ির কয়েকজন মহিলা ছুটে এসে নরেশ চন্দ্র কে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। পরে গ্রামবাসীরা এসে নরেশ চন্দ্রের এহেন ন্যাক্কারজনক কাজের জন্য তাকে বাড়ির উঠানে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বাবু ও কালাম মাস্টার নামে দুজন গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিলেও সেই অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে ইউপি সদস্য ছাত্তার সাংবাদিকদের বিষয়টি ঘাটাঘাটি না করার জন্য হুমকিও দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ওই ঘটনার পর বুধবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জানতে পারেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে শিশুটির পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়িতে রেখে সবাই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে করোনার টিকা নিতে যান। বাড়িতে একা পেয়ে তখন তাকে ধর্ষণ করেন নরেশ চন্দ্র নামে একজন। শিশুটির চিৎকারে ওই সময় পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন গিয়ে নরেশকে হাতেনাতে আটক করে।
স্থানীয়রা পরে নরেশকে উঠানে দড়ি দিয়ে বেঁধে শিশুটির মা-বাবাকে খবর দেয়। তবে ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় কয়েকজন শিশুটির পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা না করার জন্য চাপ দেন।
তাদের অভিযোগ, ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বাবু ও কালাম মাস্টার পরে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে অভিযুক্ত নরেশকে ছেড়ে দেন। সেই টাকা শিশুটির পরিবারকে না দিয়ে বাবু মেম্বারসহ সালিশকারীরা নিজেরাই ভাগবাটোয়ারা করে নেন।
শিশুটির দাদা বলেন, ‘সকালে আমরা বাড়ির সবাই ইউনিয়ন পরিষদে করোনার টিকা নিতে যাই। টিকা নিয়ে ফিরে এসে দেখি নরেশকে এলাকাবাসী আমার বাড়ির উঠানে খুঁটির সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে পরে জানতে পারি আমার নাতনিকে ধর্ষণ করেছে নরেশ চন্দ্র।
ওই ঘটনার পর ইউপি সদস্য বাবু মেম্বার ও কালাম মাস্টার গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। ঘটনার পর থেকে নরেশ পলাতক।
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার সাংবাদিকদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে বলেন, দু'পক্ষের সম্মতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। আপনারা এত বাড়াবাড়ি করছেন কেন। ৭০ হাজার টাকা কে নিয়েছে, কী করেছে, এত কিছু জেনে কী করবেন। বেশি মাথাচাড়া দিবেন না, তাহলে সমস্যায় পড়বেন।’
এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার জানান, শিশুটির পরিবার এখনও কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মতামত দিন