গাজীপুরে জামিন পাওয়ায় বাদীর ক্ষোভ আদালত চত্বরে কুপিয়ে দুই আসামি অপহরণ

গাজীপুর জেলা জজ আদালত চত্বরে মারধর করে ও কুপিয়ে জামিন পাওয়া দুই সহোদর আসামিকে অপহরণ করেছে বাদীপক্ষ। এ সময় একই মামলার ১৩ আসামিসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের পশ্চিম পাশে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিকালে আদালতের সামনে তাদের রেখে যায় অপহরণকারীরা।

ওই দুই আসামি হলেন-গাজীপুরের শ্রীপুর থানার তেলিহাটি এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে মো. মিলন মিয়া (৩৫) ও বাবুল মিয়া (৪০)। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম এবং জিএমপি সদর মেট্রো থানার ওসি মেহেদী হাসান। আহত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন-আলমগীর মৃধা, মো. রানা, দোলেনা বেগম, খোকন মিয়া, মমতাজ উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন। মামলার বাদী এসএম নাজমুল হক হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার শহীদুল্লাহর ছেলে। আসামি এনামুল হক জানান, তাদের বিরুদ্ধে বাদী নাজমুল হক জমিসংক্রান্ত মামলা করেছিলেন। আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পাওয়ার পরপরই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তিনি বলেন, আমরা আদালত থেকে বের হওয়ার সময় বাদী ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন দা, চাকু, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের পথরোধ করে। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে জানালে তিনি আমাদের আনতে দুই কর্মচারী পাঠান। কিন্তু তাদের সামনেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, জামিনের পরপরই আসামিরা বাদীপক্ষের অস্ত্রধারীদের দেখে ভয় পেয়ে বিষয়টি জানান। আমি তাদের নিরাপদে নিয়ে আসতে কর্মচারী পাঠাই। কিন্তু আদালত চত্বরে বাদীপক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আইনজীবী সমিতির দুই কর্মচারীও গুরুতর আহত হন। কর্মচারী আইয়ুব আলীর মাথায় সাতটি সেলাই দিতে হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে দুই পুলিশ সদস্য ছিলেন, তবে তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এই আইনজীবী আরও বলেন, দুই বিচার প্রার্থীকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নেওয়ার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে একটি অটোরিকশায় আদালতের প্রধান ফটকের সামনে নামিয়ে দিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এ সময় তাদের গায়ে যে জামা-কাপড় ছিল তা রেখে দিয়ে অন্য জামা-কাপড় পরিয়ে দেওয়া হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, আদালত চত্বরে হামলার ঘটনায় কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।